লোকনাথ বাবার ১৩৪ তম তিরোধান দিবস উদযাপিত
আমার কথা, দুর্গাপুর, ২ জুনঃ
সংবাদদাতাঃ প্রণয় রায়
সেদিন বাংলা ১২৯৭ সালের ১৯ শে জ্যৈষ্ঠ র সকাল। ধীরে ধীরে পুব দিকে উদিত হচ্ছেন সূর্যদেব। ক্রমে ক্রমে সূর্যদেব তেজোদীপ্ত হয়ে প্রকট হলেন আকাশে, বাবা লোকনাথের মহাপ্রয়াণের বারতা দিকে দিকে ছড়িয়ে পড়ায় বারাদির আশ্রম দেখতে দেখতে লোকারণ্য হয়ে উঠলো।দূর দুরান্তরে থেকে ভক্তরা ছুটে এসেছে বাবাকে শেষ দর্শন করতে। বাবা যে ঘোষণা করেছেন উনিশে জ্যৈষ্ঠ তিনি ইহলোক ত্যাগ করে যাবেন। বাবা আসন ত্যাগ করে ঘর থেকে আশ্রমের বারান্দায় এসে বসলেন। স্নিগ্ধ মধুর হেIসে সবাইকে প্রসাদ গ্রহণ করতে বললেন। কারণ তিনি জানেন আর কিছুক্ষনের মধ্যেই তিনি পার্থিব দেহ ত্যাগ করে অমৃতের পথে যাত্রা করবেন।ভক্তরা প্রসাদ গ্রহণ করলেন। তাদের আহার পর্ব শেষ হলে বাবা ফিরে গিয়ে তাঁর আসনে বসলেন। ঘরের ভেতর থেকে ভক্তদের বললেন–” ওরে তোরা এত কাতর হয়ে পড়েছিস কেন রে আমি কি মরে যাবো? যেমন আছি তেমন ই থাকবো।তবে এই জীর্ণ পুরাতন দেহটা থাকবে না। আমার কি মৃত্যু আছে? তোরা ভক্তি আর বিশ্বাস নিয়ে ডাকলেই দেখবি, আমি তোদের কাছে আছি।, তখন ও তোদের কথা শুনব।এখন ও যেমন দুঃখ বিপদে আমার কৃপা পাচ্ছিস, তখন ও তেমনি পাবি। আমার কথা মিথ্যে হবে না। যারা বিশ্বাস নিয়ে শ্রদ্ধাভরে আমায় স্মরণ করবে, তারাই আমার কৃপা পাবে। তোরা সত্যের পথ ধরে চলবি মনে রাখবি ভক্তি। দেখবি কোন বাধাই তোদের পথ রোধ করতে পারবে না। তবে ভক্তি আর বিশ্বাস রাখবি।”
এই উপদেশ দিয়ে বাবা চির সমাধি মগ্ন হলেন। তাঁর চোখ দুটো বিস্ফারিত, স্বাভাবিক দেহ, সারাদেহে সৌম্য স্নিগ্ধ জ্যোতিতে পরিপূর্ণ।তখন বেলা ১১.৪৫ । বাবা ইহলোক ত্যাগ করলেন।
কিন্তু তাঁর অভয় বাণী ধ্বনিত হলো দিকে দিকে এই দেহপাতের সঙ্গে সঙ্গে সব শেষ হয়ে যাবে মনে করিস না। আমি যেমনটি ছিলাম , যেমন আছি তেমনি চিরকাল থাকবো।
এদিন দুর্গাপুরের সিটি সেন্টারের সুহট্ট মলের কাছে সিটি জিম লোকনাথ মন্দিরে লোকনাথ বাবার বার্ষিক প্রতিষ্ঠা দিবসের পুজো অনুষ্ঠিত হয়। প্রচুর ভক্ত পুজোর পর প্রসাদ গ্রহণ করেন।