লন্ড্রির কাজের আড়ালে জঙ্গি কার্যকলাপ? এবার গ্রেফতার হাবিবুল্লার তৃতীয় সঙ্গী
আমার কথা, দুর্গাপুর, ২৯ জুনঃ
গত শনিবার ২১শে জুন পশ্চিম বর্ধমানের কাঁকসার মীরেপাড়া থেকে গ্রেপ্তার হয় বাংলাদেশের নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠনের সাথে যুক্ত থাকার অভিযোগে এক যুবক। ‘আনসার আল ইসলামের’ ‘শাহাদাত’ এর শীর্ষ নেতা মদম্মদ হাবিবুল্লাহ। গত রবিবার ২২শে জুন তাকে দুর্গাপুর মহকুমা আদালতে পেশ করে ১৪দিনের পুলিশ হেফাজতে নিয়ে জেরা করে থেকে আরও একজনের নাম জানতে পারে এস টি এফ।নবদ্বীপের মায়াপুরের বাসিন্দা শেখ হারেজ কে গত ২৫শে জুন হাওড়া স্টেশন থেকে গ্রেফতার করা হয়। তাকেও দুর্গাপুর মহকুমা আদালতে পেশ করা হলে মহকুমা আদালতের বিচারক তাকে ১৪দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেয়।এবার হারেজ ও হাবিবুল্লাহ কে জেরা করে তৃতীয় জনের নাম জানতে পারে তদন্তকারী দল। সেইমত চেন্নাই থেকে শেখ আনোয়ার নামের আরও একজনকে গ্রেফতার করে শনিবার দুর্গাপুর মহকুমা আদালতে পেশ করে তদন্তকারী দল। তাকেও মহকুমা আদালতে পেশ করা হলে মহকুমা আদালতের বিচারক তাকেই ১৪দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেয়।এদিন বিকালে শেখ আনোয়ার কে কাঁকসা থানায় আনার পর সেখান থেকে ফের তাকে নিয়ে কোলকাতার উদ্যেশ্যে রওনা দেয় এস টি এফ।
কে এই শেখ আনোয়ার? জানা গিয়েছে পূর্ব বর্ধমানের মঙ্গলকোটের কুলসোনা এলাকার বাসিন্দা আনোয়ার।তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেছে সে। তিন বোন আর বাবা-মা আছে বাড়িতে। চেন্নাইয়ে লন্ড্রির কাজ করে অর্থ উপার্জন করে বাড়িতে পাঠাতো বলেও পরিবারকে আর এলাকাবাসীদের জানাতো। এসটিএফ সূত্রে খবর, আল কায়দার মতাদর্শে বিশ্বাসী আনসার আল ইসলাম নামের জঙ্গি সংগঠনকে ২০১৭ সালে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে বাংলাদেশ সরকার। তারপর ওই জঙ্গী সংগঠনের সদস্যরা শাহাদাত নামের একটি গ্রুপ তৈরি করে সদস্য সংগ্রহ শুরু করে। বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মুসলমানদের উপর অত্যাচারের ভুয়ো ভিডিও সংগ্রহ করে ধর্মীয় অপ ব্যাখ্যার মাধ্যমে দেশের আইন ও বিচার ব্যবস্থার ওপর নেতিবাচক মনোভাব তৈরি করে করা হতো সদস্য সংগ্রহ। এই জঙ্গি সংগঠনের সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত ছিল কাঁকসার মহম্মদ হাবিবুল্লাহ। প্রথমে সে গ্রেফতার হয়। তাঁকে জেরা করেই প্রথমে হাওড়া স্টেশন থেকে শেখ হারেজ এবং চেন্নাই থেকে শেখ আনোয়ারকে গ্রেপ্তার করা হয়। ২০২০ সালে পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়ার এক যুবকের সাথে ধর্মীয় জলসায় আলাপ হয় আনোয়ারের। তারপর ‘উম্মান নাসিহার’ নামের একটি অনলাইন ব্লগে কাজ করার কথা জানায় সে। তারপর সেই ব্লগ থেকে নানান ধর্মীয় উস্কানি মূলক এবং নানা দেশবিরোধী খবর ছড়িয়ে দিত। চেন্নাইয়ে বসে এই কাজই চালাত সে। শুক্রবার দেশদ্রোহীতার মামলায় গ্রেপ্তার করা হয় আনোয়ারকে। তারপরে কাঁকসা থানার পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়।কাঁকসা থানার পুলিশ ধৃতকে দুর্গাপুর মহকুমা আদালতে পেশ করলে ১৪ দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক। তারপরেই এসটিএফের কর্তারা শেখ আনোয়ারকে নিজেদের হেজাজতে নিয়ে কলকাতার উদ্যেশ্যে রওনা দেয়।