পুলিশের ছবি ব্যবহার করে হোয়াটস-অ্যাপ কলে প্রতারণার নয়া ফাঁদ দুর্গাপুরে
আমার কথা, দুর্গাপুর, ১৫ মার্চঃ
কথায় বলে চোরের একশ আটটা বুদ্ধি। তাই প্রতারনার নানা ফন্দি আটতে থাকে প্রতারকরা। এবার প্রতারকের নয়া ফন্দির শিকার এখন অভিভাবকরা। এবার টার্গেট শহরের বাইরে বা রাজ্যের বাইরে পড়তে যাওয়া পড়ুয়ারা আর অভিভাবকদের টার্গেট করছে প্রতারকরা।
দুর্গাপুরের সিটিসেন্টারের বাসিন্দা অতনু ভদ্র জানান, তাঁর মেয়ে কলকাতায় পড়াশুনা করে। আজ শুক্রবার সকালে অতনুবাবুর কাছে হোয়াটসঅ্যাপ কলের মাধ্যমে অতনুবাবুকে বলা হয় তাদের মেয়ে ড্রাগ বিক্রি করতে গিয়ে ধরা পড়েছে। সাথে অতনুবাবুর মেয়ের কন্ঠস্বরও শোনানো হয়। পুলিশি আওতায় কলের সময় মোবাইল স্কিনে পুলিশের পোশাক পরা আধিকারিক ছবি দেখা যায়। বলা হচ্ছে গুগল পের মাধ্যমে টাকা পাঠানোর জন্য সময় মত টাকা না পাঠালে মেয়েকে মামলা দেওয়া হবে। প্রথম দফায় পঞ্চাশ হাজার চাওয়া হয়। অতনুবাবু ভয় পেয়ে যান। সাথে সাথে তিনি গুগল পে করে পঞ্চাশ হাজার টাকা দিয়ে দেন। এরপর ফের একবার ফোন করে দেড় লক্ষ টাকা চাওয়া হয়। তখনই অতনুবাবুর সন্দেহ হয়। এরপর তিনি দুর্গাপুরে সাইবার সেলে অভিযোগ দায়ের করেন। তবে শুধুমাত্র অতনু ভদ্র নন,
এই ঘটনা ঘটেছে দুর্গাপুরের সিটিসেন্টারের বাসিন্দা তথা দুর্গাপুর নগর নিগমের লাইসেন্স বিভাগে আধিকারিক স্বপ্নেন্দু ভৌমিকের সাথেও। ওনার ছেলে ভুবনেশ্বরে পড়াশুনা করে। ১১মার্চ রাতে ওনার কাছে ওই একই পুলিশের ছবি বিশিষ্ট একটি হোয়াটস অ্যাপ কল আসে আর ওনার ছেলেকে নিয়েও একই কথা বলা হয়। যেহেতু স্বপ্নেন্দুবাবুর পুলিশ মহলে ভালো চেনা পরিচয় আছে তাই উনি তাদের পাল্টা প্রশ্ন করার সাহস পান, আর তাতেই প্রতারক ভয় পেয়ে ফোন কেটে দেয়।
অপর এক বাসিন্দা ওষুধ ব্যবসায়ী সুজয় পোদ্দারের কাছে ১২ মার্চ এভাবেই পুলিশের ছবি ব্যবহার করা হোয়াটস অ্যাপ কল করে মেয়ে ড্রাগ পাচার করতে গিয়ে ধরা পড়েছে বলে ফোন আসে। যদিও সুজয়বাবু সেই মুহূর্তে অন্য ফোন ব্যবহার করে মেয়ের সাথে কথা বলে বুঝতে পারেন এটা কোনো প্রতারকের ফোন কল। এরকম আরো অনেক অভিভাবকদের সাথেই ঘটছে এই ঘটনা বলে পুলিশ সুত্রে জানা গিয়েছে। যখন মেয়ের সাথে কথা বলতে চান প্রতারকদের ফোনে তখন ফোনের ওপার থেকে মেয়ের গলার আওয়াজ শুনতে পান অভিভাবকরা আর তাই শুনেই দিশা হারিয়ে ফেলে প্রতারকের পাতা ফাঁদে পা দিয়ে ফেলছেন। পরবর্তীকালে যখন তাদের মেয়েদেরকে ফোন করে কথা বলে জানতে পারছেন, সব ঠিক আছে। তবে প্রতারকদের নতুন ফাঁদ এখন ধীরে ধীরে সক্রিয় হয়ে উঠেছে শহর দুর্গাপুরে। তাহলে কি দুর্গাপুরে আবারও সক্রিয় জামতারা গ্যাং? যদিও এ বিষয়ে পুলিশ যথেষ্ট সক্রিয় কারণ এই নতুন প্রতারণার একাধিক অভিযোগ জমা পড়েছে।