মানবিকতার অনন্য নজির গড়লেন সংশোধনাগারের কারারক্ষীরা
আমার কথা, দেবনাথ মোদক, বাঁকুড়া, ১৩ জুনঃ
২০১৯ সাল থেকে বাঁকুড়া সংশোধনাগারে সাজাপ্রাপ্ত বন্দী হিসেবে রয়েছেন সিমলাপাল থানার পাথরি গ্রামের বাসিন্দা সুকুমার সোরেন। বাবা মায়ের একমাত্র সন্তান সে। সম্প্রতি একটি দুর্ঘটনায় তার বাবা লখু সোরেনের কোমরের হাড় ভেঙে যায়। তিনি বাঁকুড়া শহরের একটি বেসরকারি নার্সিংহোমে ভর্তি রয়েছেন। একদিকে লোকসভা নির্বাচন এবং অন্যদিকে তীব্র গরমের পরিস্থিতিতে হাসপাতালের ব্লাড ব্যাংক এমনিতেই রক্তশূন্যতায় ভুগছে। এমতাবস্থায় লখুবাবুর অস্ত্রপচারের জন্য প্রয়োজন হয় চার বোতল রক্তের। খবর পৌঁছায় বাঁকুড়া সংশোধনাগারে। একমাত্র সন্তান দিশেহারা হয়ে শরণাপন্ন হন সংশোধনাগারের সুপারিনটেনডেন্ট শ্যামল কুমার তালুকদারের। শ্যামল বাবু এই সমস্যার কথা তুলে ধরেন তাঁর সহকর্মীদের কাছে। জেলার ধ্রুবজিৎ চৌধুরীর নেতৃত্বে হাসপাতালে গিয়ে রক্তদান করেন চারজন কারারক্ষী – অভিজিৎ মিশ্র, সন্দীপ নন্দী, প্রশান্ত ঘোষ ও সৌমেন মন্ডল। রক্ত দেওয়ার পর ঐ কারা কর্মীরা নার্সিংহোমে গিয়ে রোগীর সাথে দেখাও করেন। রক্তের ব্যবস্থা করতে পেরে স্বাভাবিকভাবেই খুশি জেলবন্দী ছেলে এবং রোগীর বাড়ির আত্মীয়-স্বজন। সুপারিনটেনডেন্ট শ্যামল কুমার তালুকদার বলেন “জেলবন্দীদের সঙ্গে কারা কর্মীদের একটা আত্মীয়তার সম্পর্ক তৈরি হয়ে যায়। কোন একটি নির্দিষ্ট ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে তারা অপরাধ করে ফেলেছে এবং শাস্তি ভোগ করছে। আমরা সর্বতোভাবে চেষ্টা করি বন্দীদের সুস্থ ও স্বাভাবিক রাখার। বাঁকুড়া থিয়েটার আকাদেমির সহায়তায় একদিকে যেমন তাদের সাংস্কৃতিক ও প্রাক্ষোভিক বিকাশের উপর গুরুত্ব আরোপ করা হচ্ছে অন্যদিকে তেমনি বিপদের সময় তাদের পাশে থেকে আমরা এই বার্তা দিতে চেয়েছি যে তোমরা একা নও।”