বকেয়া বিল মেটাতে না পারায় করোনা রোগীর মৃতদেহ আটকে রাখার অভিযোগ দুর্গাপুরের বেসরকারী হাসপাতালের বিরুদ্ধে
আমার কথা, পশ্চিম বর্ধমান(দুর্গাপুর), ১জুনঃ
বকেয়া বিল না মেটাতে পারায় প্রায় ২৪ ঘন্টা পেরিয়ে গেলেও মৃতদেহ আটকে রাখার অভিযোগ উঠছে দুর্গাপুরের বামুনাড়ার একটি বেসরকারি হাসপাতালের বিরুদ্ধে। শুধু তাই নয় ওই মৃতার নাম সরকারী পোর্টালেও তোলেনি ওই হাসপাতাল, এরকমই এক ভয়ঙ্কর অভিযোগ আনা হয়েছে মৃতার পরিবারের তরফে। যদিও প্রশাসনের তরফে বিষয়টির সত্যতা যাচাইয়ের আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।
বাঁকুড়ার সোনামুখীর বাসিন্দা উমারানী বারুই করোনায় আক্রান্ত হয়ে দুর্গাপুরের বামুনাড়ার ওই বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হন ১২মে বিকেলে। এরপর ওই হাসপাতালেই চিকিৎসা চলছিল তাঁর।
উমাদেবীর ছোট ছেলে তন্ময় বারুই বলেন যে, হাসপাতাল থেকে তাদের জানানো হয় দিন দুয়েক আগে তাঁর মায়ের শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে শুরু করে আর গতকাল অর্থাৎ সোমবার ভোরে তিনি মারা যান। এরপর উমাদেবীর চিকিৎসা বাবদ ৯ লক্ষ টাকার বিল ধরানো হয় মৃতার পরিবারকে। কিন্তু পরিবারের তরফে বলা হয় এত টাকা দিতে তাঁরা অপারগ। এরপর কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনার মাধ্যমে বিলটি ৪.৫ লক্ষ টাকায় রফা হয় আর কথা অনুযায়ী উমাদেবীর পরিবার হাসপাতালে টাকা দিয়েও দেন বলে জানান তন্ময়বাবু। প্রেক্ষিতে সোমবার সন্ধ্যেবেলা হাসপাতালের তরফে মৃতদেহ তাদের পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হবে বলে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়। সেই মতো উমাদেবীর বড় ছেলে অতনু বারুই হাসপাতালে মৃতদেহ নিতে গেলে কর্তৃপক্ষ নানা অছিলায় মৃতদেহ দিতে অস্বীকার করে আজ মঙ্গলবার সকালে ফের হাসপাতালে যাওয়ার কথা বলে। কিন্তু অভিযোগ এদিন সকালে গেলেও মৃতদেহ তাঁরা পাননা। এরপরেই ধৈর্যের বাঁধ ভাঙ্গে বারুই পরিবারের। তারা স্থানীয় মলানদিঘি ফাঁড়ি ও দুর্গাপুর মহকুমা প্রশাসনের দ্বারস্থ হন। আর তাতেই তখন বারুই পরিবার জানতে পারেন তাদের মায়ের নাম ওই হাসপাতালের তরফে সরকারি পোর্টালে তোলা হয়নি। অথচ নিয়ম অনুযায়ী করোনায় কোনো ব্যাক্তির মৃত্যু হলে সরকারি পোর্টালে মৃত ব্যাক্তি নাম সহ সমস্ত তথ্য নথিভুক্ত করতে হবে। যাতে সেই তথ্যের ভিত্তিতে মৃতদেহ সৎকারের ব্যবস্থা করতে পারে প্রশাসন।
তন্ময়বাবুর অভিযোগ হাসপাতালের তরফে ইচ্ছাকৃতভাবে তাদের মায়ের নাম সরকারী পোর্টালে তোলা হয়নি। তারা পুরো টাকা পায়নি আর বাকি টাকা আদায়ের উদ্দেশ্যেই হাসপাতালের তরফে নাম তোলা হয়নি বলে অভিযোগ।
এদিকে দুর্গাপুর মহকুমা শাসক অর্ঘপ্রসূণ কাজি বলেন তিনি অভিযোগ পেয়েছেন। বিষয়টির সত্যতা যাচাই করে যা ব্যবস্থা নেওয়ার তিনি নেবেন।