থিম পুজোর হিড়িক, খনি অঞ্চলে মন্ডপে দেশ বিদেশের মন্দিরের প্রতিচ্ছবি
আমার কথা, দুর্গাপুর, ৩ অক্টোবর:
পিতৃপক্ষের শেষে দেবী পক্ষের সূচনা হয়েছে। চলছে দেবী বরণের শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি। রাজ্যের অন্যান্য জায়গার মতো দুর্গাপুর মহকুমার অন্ডাল পাণ্ডবেশ্বর লাউদোহা খনি অঞ্চলেও প্রতিবছর ঘটা করে হয় দুর্গাপুজো। তিলোত্তমা কান্ডে এবার রাজ্যবাসীর মন ভারাক্রান্ত থাকলেও তার ছাপ পড়েনি খনি অঞ্চলের পুজোর আয়োজনে। গত কয়েক বছরে মতো এবারও খনি অঞ্চলে সবেকি পুজোর পাশাপাশি থাকছে বিভিন্ন বাজেটের থিম পুজোর আয়োজন। দেশ-বিদেশের বিভিন্ন হিন্দু দেব দেবীর মন্দিরের আদলে তৈরি হয়েছে মন্ডপ । দেবিপক্ষের শুরুতে খনি অঞ্চলের বিভিন্ন মন্ডপ ঘুরে দেখা গেল তেমনি ছবি। রেল শহর অন্ডালের দক্ষিণপল্লী সংঘশ্রী সংঘ ও পশ্চিম পল্লী সর্বজনীন এই দুটি পুজো এলাকায় মানুষের কাছে খুবই পরিচিত। এবার সঙ্ঘশ্রী সংঘের পুজো পড়লো ৭৫ তম বছরে । ১৯৫০ সালে রেলের গার্ড কর্মীরা এই পুজোর সূচনা করেছিলেন। সেই কারণে রেল কাউন্সিলের পুজো বলে এটি আগে পরিচিত ছিল। ১৯৭৫ সালে দীপক সরকার নামে এক ব্যক্তি এই পুজোর দায়িত্ব নেন। তখন থেকে সংঘশ্রী সংঘ এই পুজোর দায়িত্বভার পালন করে আসছে। এবার পুজোর বাজেট ৪১ লক্ষ টাকা। থিম “প্যাগোডার দেশ”। মায়ারনামারের বৌদ্ধ মন্দিরের আদলে তৈরি করা হয়েছে মন্ডপ। পাশেই রয়েছে “পশ্চিম পল্লী” সর্বজনীন দুর্গাপুজো। ৫৫ বছর ধরে ধারাবাহিকভাবে এখানে পুজোর আয়োজন হচ্ছে ৯ লক্ষ টাকা বাজেটের এই পুজোয় এবার তৈরি করা হয়েছে কাল্পনিক মন্দিরের আদলে মন্ডপ। ইসিএলের খাসকাজোড়া কোলিয়ারীর পুজো এবার পড়ল ৪৭ তম বর্ষে। সাড়ে সাত লক্ষ টাকা বাজেটের এই পুজোর মণ্ডপ তৈরি হয়েছে “অক্ষরধাম” মন্দিরের আদলে। পুজো ক’দিন এখানে থাকছে বড় মেলার আয়োজন। খান্দরা পঞ্চায়েতের বিশ্বেশ্বরী কোলিয়ারি সর্বজনীন পুজো এবার পড়ল ৫০ বছরে। দশ লক্ষ টাকা বাজেটের এই পুজোতে মন্ডপ তৈরি হয়েছে কোনারকের পোড়ামাটির মন্দির। চোখ ধাঁধানো পূজো মণ্ডপ দর্শনার্থীদের নজর কাড়বে বলে আশা পুজো কমিটির সদস্যদের। পাণ্ডবেশ্বর ব্লকের বৈদ্যনাথপুর পঞ্চায়েতের জামাই পাড়া হরিজন কল্যাণ সমিতির পুজো পড়লো ১৪ বছরে। ৬ লাখ টাকা বাজেটের পুজোর মূল আকর্ষণ ডাকের প্রতিমা। আকর্ষণীয় মন্ডপ তৈরি করা হয়েছে নীল সাদা রংয়ের কাপড় দিয়ে। দুর্গাপুর ফরিদপুর ব্লকের মাধাইপুর কোলিয়ারি সর্বজনীন পূজো পড়লো ৪৭ বছরে। ১১ লক্ষ টাকা বাজেটের পুজোর মন্ডপ তৈরি হয়েছে “বৃন্দাবন ধাম” মন্দিরের আদলে। পুজোর প্রস্তুতি প্রায় শেষ । এখন দেবীবরণের প্রতীক্ষা। শারদ উৎসবে শামিল হতে মুখিয়ে রয়েছে খনি অঞ্চলের বাসিন্দারা।