খনি এলাকায় মিললো রামায়ণের দুষ্প্রাপ্য পান্ডুলিপি

আমার কথা, অন্ডাল, ১৫ মার্চঃ
উখড়া গ্রামের মহন্ত অস্থল আশ্রমের সংগ্রহে রয়েছে সোনার জল দেওয়া ছবি সহ রামায়ণের দুষ্প্রাপ্য পান্ডুলিপি। আশ্রমের জিনিসপত্রের আবর্জনার মধ্যে থেকে সম্প্রতি সেটি উদ্ধার হয়। এই পান্ডুলিপি প্রাচীন ও দুষ্প্রাপ্য বলে জানান আশ্রমের মহন্ত। প্রায় ৭০০ বছর আগে উখড়া গ্রামে গড়ে ওঠে নিম্বাক আশ্রম। যা এলাকায় মহন্ত অস্তল আশ্রম নামে পরিচিত। আশ্রমে রাধা কৃষ্ণের পাশাপাশি অন্যান্য দেবদেবীর মূর্তিও বিরাজমান। ঝুলন উৎসবের সময় ছাড়াও সারা বছর এই আশ্রমে বহু ভক্তের সমাগম ঘটে। আশ্রমের সংগ্রহে রয়েছে বেশকিছু প্রাচীন দুষ্প্রাপ্য জিনিস। যার মধ্যে অন্যতম হলো সোনার জল দিয়ে আঁকা ছবি সহ রামায়ণের সচিত্র পান্ডুলিপি। সম্প্রতি আশ্রম থেকেই সেটি উদ্ধার হয়েছে বলে জানান আশ্রমের বর্তমান মহন্ত নারায়ণ শরণদেব জী। উদ্ধার হওয়া পান্ডুলিপিটি অতি প্রাচীন ও দুষ্প্রাপ্য বলে জানান তিনি। ভুজ্য পত্রের ওপর সংস্কৃত ভাষায় লেখা ১২০০ পাতার সচিত্র এই পান্ডুলিপিটি রামায়ণের সংক্ষিপ্ত সংস্করণ বলে জানা যায়। রামায়ণের একাধিক ছবিও রয়েছে পান্ডুলিপিটিতে। তবে পান্ডুলিপির লেখক কে তা এখনো জানা যায়নি। ছবিগুলোর ওপর দেওয়া আছে সোনার জল। গোটা পান্ডুলিপিটি সোনার জরি দিয়ে বাঁধা। পান্ডুলিপিটি ৪০০ থেকে ৪৫০ বছরের পুরনো বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে শুধু রামায়ণের পান্ডুলিপি নয় আরও বেশ কিছু দুষ্প্রাপ্য জিনিস সম্পতি উদ্ধার হয়েছে এই আশ্রমে বলে জানান মহন্ত নারায়ণ শরণদেব জী । যার মধ্যে অন্যতম হলো আশ্রমকে দান করা সম্রাট শেরশাহের জমির দলিল । প্রায় ৭০০ বছর আগে ভূজ্য পত্রের উপর ঝামানি (চাল ফুরিয়ে তৈরি করা কালি) কালিতে ফরাসি ভাষায় লেখা হয়েছিল দলিলটি । দলিলে রয়েছে শেরশাহের আমলের সিলমোহর । আশ্রম সূত্রে জানা যায় তৎকালীন শেরশাহের অসুস্থ মেয়েকে চিকিৎসা করে সুস্থ করে তুলেছিলেন আশ্রমের তৎকালীন মহন্ত প্রয়াত সবুরাম দেবাচার্যের শীর্ষ দয়ারাম শরণ দেবাচার্য্য। কৃতজ্ঞতাবসত সম্রাট শেরশাহ তখন আশ্রমকে বেশ কিছু জমি দান করেছিলেন। এটা তারই দলিল বলে জানা যায়। এছাড়াও আশ্রমে আবিষ্কৃত হয়েছে রানী ভিক্টোরিয়ার লেখা একটি দুষ্প্রাপ্য চিঠি। চিঠিটি পোস্টকার্ডের ওপর লেখা। লেখা হয়েছিল ১২৯৮ সালে। সম্প্রতি আশ্রমের আবর্জনা থেকে এই দুষ্প্রাপ্য জিনিসগুলি উদ্ধার হয়েছে । অনাদরে সেগুলির ক্ষতিও হয়েছে। উদ্ধারের পর দুষ্প্রাপ্য জিনিসগুলি সংরক্ষণের উদ্যোগ নিয়েছেন মহন্ত জী। তিনি জানান রামায়ণের পান্ডুলিপি, শেরশাহের জমির দলিল, মহারানী ভিক্টোরিয়ার চিঠি এগুলি বিশেষ তরল (সেলিকা জেল) দিয়ে রাখা হয়।