৩৪ ঘন্টা পর উদ্ধার হল তলিয়ে যাওয়া ছাত্রের নিথর দেহ
আমার কথা, পান্ডবেশ্বর, ২৮ নভেম্বর:
পাণ্ডবেশ্বর এর অজয় নদে স্নান করার সময় ডুবে নিখোঁজ হয় মৃদুল বর্ণওয়াল নামে এক কিশোর। গতকাল ডুবুরি নামিয়ে সারাদিন খোঁজাখুঁজির পরও তার সন্ধান পাওয়া যায়নি। অবশেষে মঙ্গলবার বিকেল চারটে নাগাদ মৃদুলের মৃতদেহ উদ্ধার হয় নদী থেকে।
রাস পূর্ণিমা উপলক্ষে সোমবার পাণ্ডবেশ্বর এর অজয় নদের বিভিন্ন ঘাটে ভিড় জমিয়েছিল অসংখ্য পুণ্যার্থী। নদের ওপারে বীরভূম জেলার ভীমগড় ঘাটে স্নান করতে নেমেছিল অন্ডাল থানার উখড়া গ্রামের সারদাপল্লীর বাসিন্দা বিকাশ বর্ণওয়াল সহ তার পরিবার। ভোর সাড়ে ছ’টা নাগাদ স্নান করার সময় আচমকা পা-হড়কে জলে তলিয়ে যায় বিকাশ বাবুর ছেলে মৃদুল (১৪) সহ আরও চার কিশোর। নদের ঘাটে উপস্থিত অন্যদের তৎপরতায় অন্যরা বরাত জোড়ে বেঁচে গেলও জলে তলিয়ে যায় মৃদুল। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় স্থানীয় বিধায়ক নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী। আসে পাণ্ডবেশ্বর থানা ও বীরভূম জেলার খয়রাশোল থানার পুলিশ। স্থানীয় জেলেদের জলে নামিয়ে শুরু হয় নিখোঁজ কিশোর মৃদুলের খোঁজে তল্লাশি। তাতে সাফল্য না পাওয়ায় তলব করা হয় বীরভূম জেলা প্রশাসনের ডুবুরি দলকেম স্পিড বোটে চড়ে শুরু হয় নদীতে তল্লাশি। অন্ধকার হয়ে আশায় গতকাল সন্ধ্যার পর বন্ধ হয়ে যায় তল্লাশির কাজ।
আজ মঙ্গলবার সকালে ফের নদীতে নেমে তল্লাশি শুরু করে ডুবুরিরা। কিন্তু তাতেও মিলছিল না কিশোরের খোঁজ। এক সময় ধৈর্য হারান নিখোঁজ মৃদুলের অভিভাবক ও আত্মীয় পরিজনেরা। দ্রুত উদ্ধারের দাবিতে এদিন বেলা বারোটা নাগাদ অজয় সেতুর ওপর তারা পথ অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখানো হয়। উদ্ধার কাজে প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে ক্ষোভ উগড়ে দেন তারা। পরে পুলিশের মধ্যস্থতায় প্রায় ৩০ মিনিট পর অবরোধ উঠে। দুর্ঘটনার খবর পেয়ে এদিন বেলা তিনটে নাগাদ উদ্ধার কাজ দেখতে নদী ঘাটে আসেন বীরভূমের সাংসদ শতাব্দী রায়। উদ্ধার কাজ নিয়ে প্রশাসন ও নিখোঁজ কিশোরের অভিভাবকদের সাথে তিনি কথা বলেন। সাড়ে তিনটে নাগাদ তিনি সেখান থেকে চলে যান। এর কিছুক্ষণ পর বিকেল চারটে নাগাদ উদ্ধার হয় নিখোঁজ মৃদুলের মৃতদেহ। গতকাল যেখানে মৃদুল জলে ডুবে গিয়েছিল তার কিছুটা দূর থেকে ডুবুরির দল তার দেহ উদ্ধার করে। ময়না তদন্তের জন্য উদ্ধারের পর দেহটি থানায় নিয়ে যায় পুলিশ। মর্মান্তিক ঘটনাটি নিয়ে গতকাল থেকে এলাকায় রয়েছে শোকের ছায়া।