দুর্গাপুরের বুকিং এজেন্সির হাত ধরে এস.বি.এস.টি.সিতে কোটি কোটি টাকার দুর্নীতি
আমার কথা, দুর্গাপুর, ২৬ নভেম্বর:
দুর্নীতির পর দুর্নীতি। রাজ্য সরকারের একের পর এক দুর্নীতি প্রকাশ্যে আসছে, যা নিয়ে সরগরম রাজ্য রাজনীতি। চাকরি থেকে রেশন, কয়লা থেকে গরু, বালি। এসব দুর্নীতির পর এবার রাজ্য পরিবহন দপ্তরের অধীন দক্ষিণ বঙ্গ রাজ্য পরিবহন নিগম বা এসবিএসটিসি এক বিশাল দুর্নীতির অভিযোগ প্রকাশ্যে এলো, আর এই দুর্নীতির অঙ্কটি শুনে চক্ষু কপালে ওঠার পরিস্থিতি শিল্পাঞ্চলবাসীর। বিশাল অঙ্কের টিকিট বিক্রির টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠল সংস্থার অন্যতম টিকিট বুকিং এজেন্ট সংস্থা দুর্গাপুরের মেসার্স নিউ ইউরেকা ট্রাভেলস ক্লাব নামে একটি বেসরকারি সংস্থার বিরুদ্ধে।দক্ষিণবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহন সংস্থার ম্যানেজিং ডাইরেক্টর ময়ুরী বাসু কোক ওভেন থানায় একটি লিখিত অভিযোগে জানান যে মেসার্স নিউ ইউরেকা ট্রাভেলস ক্লাব নামে ওই সংস্থাটি এসবিএসটিসি-র ৭ কোটি ১৯ লক্ষ ১০ হাজার টাকা আত্মসাৎ করেছে। অবিলম্বে ওই সংস্থার বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা গ্রহণের আবেদন জানিয়েছেন ময়ুরী দেবী। তাঁর দাবি ২০০৩ সাল থেকে এই সংস্থাটি এসবিএসটিসি-র টাকা আত্মসাত করে চলেছে।মেসার্স নিউ ইউরেকা ট্রাভেলস ক্লাব নামে ওই সংস্থাটি এসবিএসটিসি-র ইউজার আইডি এবং পাসওয়ার্ডের অপব্যবহার করে এই পুকুর চুরি করে চলেছে এবং অবাক করা কান্ড, গত ২৩ নভেম্বর কোকওভেন থানায় এফআইআর করার পর ৪৮ ঘন্টা কেটে গেলেও এখনো ওই সংস্থা বহাল তবিয়তে টিকিট বিক্রি করে চলেছে। এ বিষয়ে এসবিএসটিসি-র চেয়ারম্যান প্রাক্তন তৃণমূল বিধায়ক সুভাষ মন্ডল জানান এটি নিয়ে বিভাগীয় তদন্ত চলছে। প্রায় দেড় বছর ধরে এই তদন্ত চলছে। এদিকে যে সংস্থার বিরুদ্ধে এই দুর্নীতির অভিযোগ উঠছে সেই মেসার্স নিউ ইউরেকা ট্রাভেলস ক্লাবের পক্ষ থেকে জানানো হয় এটি কম্পিউটারে সফটওয়ারের গন্ডোগোলের কারনে হয়েছে। কোনো দুর্নীতির ব্যাপার নেই। তবে এ ব্যাপারে বিরোধীদের অনেকেই কটাক্ষ করে বলছেন, তৃণমূলের জমানায় এই ধরণের ন্যক্কারজনক আরো অসংখ্য ছবি প্রতি মুহূর্তেই দেখা যায়। অনেকেই বিষয়টিকে চোরে চোরে মাসতুতো ভাইয়ের সঙ্গেও তুলনা করেছেন। এ ব্যাপারে
রাজ্যের পরিবহন মন্ত্রী স্নেহাশীস চক্রবর্তী বলেন, আজ যে দুর্নীতি গুলি দিনের আলোয় আসছে, সেগুলির সিংহভাগই শুরু হয়েচিল বাম আমলে। তবে শুরু যখনই হোক, যাদের বিরুদ্ধে এফআইআর হয়েছে, তাদের কাওকেই ছাড়া হবে না। যারা ওই দুর্নীতিগ্রস্থ সংস্থার সঙ্গে কোনরকম যোগাযোগ রাখবে, ছাড়া হবেনা তাদেরও। প্রশ্ন উঠছে, স্নেহাশীস বাবুর দেওয়া এই প্রতিশ্রুতি কি আদৌ কোনদিনও দিনের আলোর মুখ দেখবে? যারা রাজ্য সরকারের এত বিপুল অঙ্কের টাকা হজম করে বহাল তবিয়তে ঘুরে বেড়াচ্ছে, তারা কি আদৌ কোনদিন আইনের দ্বারা শাস্তি পাবে, নাকি রাজ্যের আকাশে উড়তে থাকা শত শত দুর্নীতির মত এই দুর্নীতিও দুদিনেই ঢাকা পড়ে যাবে ? সময়ই এর উত্তর দেবে।