দুর্গাপুরে সরকারী জমিতে খনন করে চলছে সাদা পাথরের অবৈধ পাচারের কারবার
আমার কথা, দুর্গাপুর, ১৭ সেপ্টেম্বর:
দুর্গাপুর মহাকুমার বেশ কয়েকটি জায়গাতে সাদা পাথর খনন করে চলছে পাচারের অবৈধ কারবার। খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিলেন জেলা ভূমি আধিকারিক।
দুর্গাপুর- ফরিদপুর ব্লকের অন্তর্গত হেতেডোবা, বাঁশগড়া ও দুর্গাপুরের কমলপুরে খনন করে সাদা পাথর তুলে চলছে পাথরের অবৈধ পাচার কারবার। সরকারি জমিতেই এই কারবার রমরমিয়ে চলছে । বিষয়টি নিয়ে মহাকুমা শাসক, মহকুমা ভূমি আধিকারিক ও জেলা ভূমি আধিকারিক এর কাছে অভিযোগ জানানোর পরও অবৈধ পাচার কারবার বন্ধ হয়নি বলে অভিযোগ স্থানীয়দের । খোঁজ নিয়ে জানা যায় হেতেডোবা, বাঁশগড়া, কমলপুর এলাকায় যেসব সরকারি খাস জমি থেকে পাথর খনন করা হচ্ছে সেই জমি আগে ছিল বর্ধমান রাজাদের । ১৯২০ সালে তৎকালীন বর্ধমান রাজা বিজয় চাঁদ মেহতাব এর কাছ থেকে ঐ জমি ৯৯ বছরের জন্য লিজ পান এনএন চ্যাটার্জি ও জে এন চ্যাটার্জী নামে দুই ব্যক্তি । ২০১৮ সালে ওই জমি খাস ঘোষণা করা হয় সরকারের পক্ষ থেকে । বিষয়টি নিয়ে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন লিজ হোল্ডারদের পক্ষে দেব কুমার চ্যাটার্জি । বিষয়টি এখন হাইকোর্টের বিচারাধীন । দেব কুমার চ্যাটার্জী জানান ওই জমিতে আগে ভূমি দপ্তরের অনুমতি নিয়ে সাদা পাথর খননের ব্যবসা করতেন তারা । ২০১৮ সালের পর ভূমি দপ্তর পাথর খননের অনুমতি দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে ।
স্থানীয়দের অভিযোগ বৈধ খনন বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর এখানে শুরু হয়েছে অবৈধ খনন ও পচার কাজ। এলাকায় খোঁজখবর করে জানা যায় ভোরবেলা থেকে সকাল আটটা পর্যন্ত খনন কাজ চলে। প্রথমে মাটি খুঁড়ে পাথর বের করা হয়। তারপর বিভিন্ন সাইজের পাথরকে আলাদা করা হয়। সন্ধ্যার পর ট্রাক্টর, ডাম্পার ও বড় গাড়িতে করে সেই পাথর করা হয় পাচার। স্থানীয় কলকারখানা ছাড়াও এই পাথর জাতীয় সড়ক ধরে পৌঁছে যায় ভিন রাজ্যেও। জানা যায় এই সাদা পাথর বোরিং এর কাজে, লোহা ও রং তৈরির কাজে কাঁচামাল হিসাবে ব্যবহার হয়। প্রতি ১০০ সিএফটি(cft) পাথরের দাম পড়ে প্রায় নয় হাজার টাকা। প্রতিদিন লাখ লাখ টাকার পাথর পাচারের কাজ হচ্ছে বলে সূত্র মারফত জানা গিয়েছে। এই কাজে পাচারকারীদের সাথে শাসকদলের স্থানীয় নেতা ও প্রশাসনের একাংশ জড়িত বলে অভিযোগ। খোঁজ নিয়ে জানা যায় দুর্গাপুরের শ্রমিক সংগঠনের শাসকদলের এক নেতার যোগ রয়েছে এই কাজে।
বিষয়টি নিয়ে মহকুমা ভূমি দপ্তরের আধিকারিক অমিত চট্টোপাধ্যায়ের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন এই বিষয়ে তিনি কিছু বলতে অপারগ। এরপর জেলা ভূমি দপ্তরের আধিকারিক সন্দীপ টুডুর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান এরকম কোন অভিযোগের কথা জানা নেই তার ।তবে বিষয়টি খোঁজ নিয়ে পদক্ষেপ নেওয়ার আশ্বাস দেন তিনি।