ক্রমশঃ উত্তেজনা বাড়ছে ভারত চিন সীমান্তে, কেমন দিন কাটাচ্ছেন খনি অঞ্চলের চিনা আধিকারিরা
আমার কথা, পশ্চিম বর্ধমান, ৩০জুনঃ
চিনা সৈনিকের হাতে ভারতীয় জওয়ান্দের মৃত্যুর পর ক্রমশঃ সম্পর্ক খারাপ হচ্ছে ভারত চিন সম্পর্ক আর তার জেরে ভারতের ভেতরে চিনাদের প্রতি ক্রমশ ক্রোধ বাড়ছে। কোথাও কোথাও চিনাদের প্রতি প্রতিশোধের স্পৃহা তৈরী হচ্ছে এদেশের মানুষের। একদিকে যেমন চৈনিক দ্রব্য বর্জনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে এই দেশে তেমনই এই দেশে বসবাসকারী চিনের বাসিন্দাদের প্রতিও একটা চরম মনোভাব তৈরী হচ্ছে এদেশের মানুষজনের। ফলে অনেক চিনের বাসিন্দা যারা এদেশে কর্মসূত্রে বসবাস করেন তাদের মধ্যে অনেকেই অস্বস্তিতে পড়েছেন।
যেমন লাউদোহায় ইসিএলের ঝাঁঝরা এরিয়ার এম আই সি খনিতে কাজ করেন ১৮জন আধিকারিক। এই খনিতে চীনের প্রযুক্তি লং ওয়াল পদ্ধতিতে কয়লা উত্তোলন হয়। এখানে কয়লা উত্তোলন ও প্রযুক্তির কাজে যুক্ত রয়েছেন এই আধিকারিকরা। সীমান্তে উত্তেজনা কারণে অস্বস্তিতে পড়েছেন এই চিনা আধিকারিকরা। তাই বাড়ানো হয়েছে তাদের নিরাপত্তা। অবাঞ্ছিত ঘটনা এড়াতে তাদের গতিবিধিও নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে সংস্থার নির্দেশে। ঝাঁঝরার চিনা গেস্টহাউসে থাকেন এই চিনা আধিকারিকরা। ভাষা সমস্যার কারণে তাদের সাথে সর্বদা থাকেন তিনজন দোভাষী। কিছুদিন আগে পর্যন্ত এই চিনা আধিকারিকদের এলাকার আশপাশে অবাধে ঘুরে বেড়াতে দেখা যেত। প্রায় প্রতিদিনই নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কেনার জন্য তারা যেতেন উখরা বাজারে। কিন্তু সীমান্তে উত্তেজনার কারনে তাদের দৈনন্দিন জীবন অনেকটাই পাল্টে গিয়েছে। কাজের সময় ছাড়া বাকি সময় তারা কার্যত গৃহবন্দী হয়ে থাকছেন।
চিনা আধিকারিকদের দোভাষীর কাজে যুক্ত থাকা অমিত জানান, চায়না গেস্ট হাউস থেকে কর্মস্থল ঝাঁঝরা এমআইসি র দূরত্ব দু’কিলোমিটার । কর্মস্থলে যাওয়া আসার জন্য চিনা নাগরিকদের জন্য সংস্থার বাস রয়েছে, সেই বাসে করে তারা কর্মস্থলে যান প্রতিদিন। চিনের সাথে উত্তেজনার কারণে বাসে দুজন সংস্থার নিরাপত্তারক্ষী থাকেন সবসময়। কাজের পর তারা হোস্টেলের মধ্যেই থাকেন। বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া তারা বাইরে বের হন না । হোস্টেলের অদূরে একটি মুদিখানার দোকান রয়েছে। প্রয়োজনীয় জিনিস কেনা কাটার জন্য কখনো-সখনো তারা দল বেঁধে দোকানে যায়। সাথে সংস্থার নিরাপত্তারক্ষীরাও থাকেন। সীমান্তে উত্তেজনার কারনেই তাদের নিরাপত্তার স্বার্থে সংস্থা তাদের গতিবিধি নিয়ন্ত্রণ করেছে বলে জানান অমিতবাবু।
চায়না হোস্টেলে নিরাপত্তার কাজে যুক্ত নিরাপত্তারক্ষী শেখ ফাইজুল জানান চায়না হোস্টেলের নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। বর্তমানে সেখানে সর্বদা দু-তিনজন নিরাপত্তা রক্ষী মোতায়েন থাকেন।
সংস্থার আধিকারিক এসপি রায় বলেন চিনা অফিসাররা আমাদের অতিথি । তাদের সাথে অতিথি সুলভ আচরণ করাটা আমাদের কর্তব্য। এখানে তাদের নিয়ে কোনো সমস্যা না থাকলেও অবাঞ্ছিত ঘটনা এড়াতে তাদের নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে বলে জানান তিনি।