বকেয়া চাকরির দাবিতে কোলিয়ারির বোরিং এর কাজ বন্ধ করলো আন্দোলনকারীরা
আমার কথা, অন্ডাল, ২৭ ডিসেম্বরঃ
দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ থাকা ইসিএলের কাজোরা এরিয়ার মধুজোর কোলিয়ারি ফের চালু করার উদ্যোগ নিয়েছে সংস্থা। কয়লা উৎপাদনের বরাত দেওয়া হয়েছে একটি বেসরকারি সংস্থাকে। কিন্তু বকেয়া চাকরি ও নতুন করে জমি অধিগ্রহণ সহ কয়েকটি কারণে কোলিয়ারিটি ফের চালু করা নিয়ে দেখা দিয়েছে অনিশ্চয়তা। সম্প্রতি উক্ত কোলিয়ারির পরিত্যক্ত আবাসনগুলি খালি করার বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে সংস্থা। ৩০ বছর ধরে আবাসন গুলি দখল করে বসবাস করছে প্রায় ৭০ টি পরিবার । পুনর্বাসনের দাবিতে তারা ইতিমধ্যে শুরু করেছে বিভিন্ন জায়গায় দরবার ও আন্দোলন। ১৯৮৪ সালে মধুজোর কোলিয়ারির জন্য দক্ষিণখন্ড, ভাদুর, কালিপুর গ্রাম সহ সংশ্লিষ্ট এলাকায় বেশ কিছু জমি অধিগ্রহণ করে সংস্থা। জমির বিনিময়ে কিছু জমিদাতা চাকরি পেলেও এখনো ৩৩ জনের চাকরি বকেয়া রয়েছে। নতুন করে কোলিয়ারিটি চালু হবে এই খবর চাউর হতেই চাকরি না পাওয়া জমিদাতারা সংগঠিত হয়ে সক্রিয় হয়েছে । বকেয়া চাকরি না দেওয়া পর্যন্ত নতুন কোলিয়ারির কাজ করতে দেওয়া হবে না বলেও জানিয়েছে তারা। বিষয়টির এখনো কোন মীমাংসা হয়নি। এরপর রয়েছে নতুন করে জমি অধিগ্রহণে জটিলতা। যে জায়গাগুলি নতুন করে অধিগ্রহনের প্রয়োজন রয়েছে, প্রস্তাবিত জমির মালিকরা বেসরকারি সংস্থাকে জমি দিতে আগ্রহী নয় । জমি সরাসরি কিনতে হবে ইসিএলকে, এই দাবিতে সংগঠিত হয়েছে জমির মালিকেরাও। তৈরি হয়েছে “অন্ডাল কৃষি জমি জীবিকা রক্ষা সমিতি” নামে সংগঠন। বৃহস্পতিবার প্রস্তাবিত জমির নীচে মজুদ কয়লার পরিমাণ জানতে শুরু হয় বোরিং এর কাজ। এই কাজের বরাত পাই পিএমপিডিএলআই নামে সংস্থা । এই খবর জানতে পেরে শুক্রবার ঘটনাস্থলে জড়ো হয় জীবন জীবিকা রক্ষা সমিতির সদস্য ও স্থানীয়রা। বকেয়া চাকরি ও সরাসরি জমি অধিগ্রহণের দাবি না মেটা পর্যন্ত কাজ করতে দেওয়া হবে না বলে সংস্থাকে তারা সাফ জানান। বোরিং এর কাজ কাদের অনুমতিতে করা হচ্ছে সেই নিয়েও দেখা দেয় জটিলতা। বরাত পাওয়া বেসরকারী সংস্থার লোকজনকে সেখানে দেখা যায়নি। আন্দোলনকারীরা সংস্থার কাজোড়া এরিয়ার জেনারেল ম্যানেজার প্রশান্ত কুমারের সাথে যোগাযোগ করলে তার কাছে এই বিষয়ে কোন খবর নেই বলে জানান তিনি। উত্তেজনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় অন্ডাল থানার পুলিশ। আন্দোলনকারীদের বাধাতে কাজ বন্ধ রাখার কথা জানাই বরাত পাওয়া ওই সংস্থা। জীবন জীবিকা রক্ষা সমিতির পক্ষে সভাপতি উজ্জ্বল পাল, সম্পাদক তপন মুখার্জি, প্রবীর মন্ডল, শরত ঘাটিরা বলেন নতুন করে কোলিয়ারিটি চালু হলে তাতে কারো কোন আপত্তি নেই। কিন্তু বকায়া চাকরি ও সরাসরি জমি অধিগ্রহণের দাবি সংস্থাকে মানতে হবে। যতদিন না এই দাবিগুলি মানা হচ্ছে ততদিন মালিকদের নিজস্ব জমিতে কোনরকম কাজ করতে দেওয়া হবে না বলে সাফ জানান তারা।