শহরের কৃতিদের সম্মানিত করা হল ‘দুর্গাপুর সম্মান’ অনুষ্ঠানে
আমার কথা, দুর্গাপুর, ২ সেপ্টেম্বরঃ
১লা সেপ্টেম্বর দুর্গাপুর সৃজনী প্রেক্ষাগৃহ সেজে উঠেছিল বাংলা সাজে। ‘দুর্গাপুর সম্মান’ অনুষ্ঠানকে ঘিরে এক আলাদা উন্মাদনা ছিল শহর জুড়ে যা এদিন প্রত্যক্ষ করা গেল এই প্রেক্ষাগৃহে। শুরুতেই প্রেক্ষাগৃহের বাইরে দুর্গাপুরের রূপকার ডাঃ বিধানচন্দ্র রায়ের ছবিতে মাল্যদানের মধ্যে দিয়ে অনুষ্ঠানের সূচনা হয়। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের গ্রামোন্নয়ন ও পঞ্চায়েত মন্ত্রী প্রদীপ মজুমদার, জেলাশাসক এস পোন্নমবলম, আসানসোল দুর্গাপুর পুলিস কমিশনারেটের কমিশনার সুনীল কুমার চৌধুরী, পান্ডবেশ্বরের বিধায়ক নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী, দুর্গাপুর মহকুমা শাসক সৌরভ চ্যাটার্জি, ডিসিপি(পূর্ব) অভিষেক গুপ্তা, এডিডিএ এর চেয়ারম্যান কবি দত্ত, দুর্গাপুর নগর নিগমের চেয়ারপার্সন অনিন্দিতা মুখার্জি, প্রাক্তন মেয়র অপুর্ব মুখার্জি সহ আরো অনেকে।
আসানসোল দুর্গাপুর উন্নয়ণ পর্ষদ ও দুর্গাপুর নগর নিগমের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত ‘দুর্গাপুর সম্মান ২০২৪’ এর প্রথম বছর দুর্গাপুরবাসীর মনে এক আলাদা জায়গা করে নিলো। পড়াশুনা ও ক্রীড়া জগতে নানা প্রতিবন্ধকতার মধ্যেও নিজের নিজের জায়াগায় যারা কীর্তি স্থাপন করে চলেছেন তেমনই তিনজন কীর্তিমানকে এক লক্ষ টাকা করে আর্থিক অনুদান দেওয়া হল এদিনের অনুষ্ঠান মঞ্চে। বিক্রম ঘোষ কাঁকসার চুঁয়া গ্রামের বাসিন্দা বর্তমানে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ইলেক্ট্রনিক্স ও টেলি কমিউনিকেশন নিয়ে পাঠরত, বাবা পেশায় একজন কৃষক। আর্থিক অনটনের মধ্যে দিয়ে পড়াশুনা চালিয়ে যাচ্ছে বিক্রম । দুর্গাপুর সম্মান অনুষ্ঠানের মধ্যে দিয়ে এক লক্ষ টাকা অনুদান দেওয়া হয় বিক্রমকে। মহিষ্কাপুর রোডের বাসিন্দা সেঁজুতি পাত্র, মর্ডাণ হাইস্কুলের প্রাক্তনী। বাবা একটি বেসরকারী সংস্থায় কর্মরত। মা দুর্গাপুর নগর নিগমের একজন স্বাস্থ্যকর্মী ছিলেন কিন্তু ২০২৩ সালের ডিসেম্বর মাসে দুর্ঘটনায় তাঁর মৃত্যু হয়। বর্তমানে সেঁজুতি ক্যালকাটা মেডিক্যাল কলেজে পাঠরতা। বিশেষভাবে সক্ষম অনামিকা গড়াই বি-জোনের শোভাপুরের বাসিন্দা, দুর্গাপুর ঈশ্বর চন্দ্র বিদ্যাসাগর পাবলিক হাই স্কুল এর দ্বাদশ বর্ষের ছাত্রী। বাবা বেসরকারী সংস্থায় কাজ করেন আর মা বেসরকারী হাসপাতালের হস্টেলের নিরাপত্তারক্ষী। বিশেষভাবে সক্ষম হলেও সমস্ত প্রতিবন্ধকতাকে দূরে সরিয়ে রেখে দেশ বিদেশ থেকে সাঁতারে বহু পদক জয় করেছে অনামিকা এদিন অনামিকাকেও দুর্গাপুর সম্মানে সম্মানিত করা হয়। এর পাশাপাশি এদিন উদ্যোগপতিদের মধ্যে থেকেও তিনজনকে দুর্গাপুর সম্মানে ভূষিত করা হয়। তাঁরা হলেন নব উদ্যোগী সুকন্যা মুখার্জি, সেরা উদ্যোগী(মাঝারি ক্ষুদ্র ও অতিক্ষুদ্র শিল্প) দম্পতি চেতন খৈতান ও বর্ষা খৈতান এবং সেরা উদ্যোগপতি নন্দিনী চৌধুরী। এছাড়াও এদিনের অনুষ্ঠানে বিশেষ সম্মান ছিল ‘দুর্গাপুর রত্ন সম্মান’। এই দুর্গাপুর রত্ন সম্মানের ভূষিত করা হয় খনি অঞ্চলের বালিজুড়ির বাসিন্দা তথা বর্তমানে মুখ্যমন্ত্রীর মুখ্য উপদেষ্টা আলাপন বন্দোপাধ্যায়কে। এদিনের এই অনুষ্ঠানকে নানা শিল্পীদের সংগীত ও নৃত্যের ডালি দিয়ে সাজানো হয়েছিল। এদিনের অনুষ্ঠানের মূল আকর্ষণ ছিল বিখ্যাত সঙ্গীত শিল্পী মনোময় ভট্টাচার্যের গান। সব মিলিয়ে দুর্গাপুর সম্মান ২০২৪ এর প্রথম বর্ষের অনুষ্ঠানে মুখরিত হয়ে উঠেছিল সৃজনী প্রেক্ষাগৃহ।