দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানার ইতিহাসে প্রথমবার, পুজোতে মিলবে না বোনাস

আমার কথা, পশ্চিম বর্ধমান(দুর্গাপুর), ২৫ সেপ্টেম্বরঃ
আর দিন কয়েক বাকি আর তারপরেই আট থেকে আশি সকলেই মেতে উঠবেন বাঙ্গালীর শ্রেষ্ঠ উৎসব দুর্গাপুজায়। গত দুবছর করোনো অতিমারীর কারনে বিধিনিষেধ মেনে বলতে গেলে নমো নমো করে পুজো সেড়েছেন সকলেই। সে বারোয়ারী পুজোই হোক কিংবা সার্বজনীন পুজো। ফলে এই পুজোর উপর নির্ভরশীল বহু সংখ্যক মানুষ অর্থ কষ্টের মধ্যে পড়েছিলেন। স্বভাবতই এ বছর করোনার প্রভাব অনেকটাই কম বলে ফের আশায় বুক বেঁধেছেন সকলে। এই দুর্গাপুজা শুধুমাত্র ব্যবসায়ীদের জন্যও নয়। চাকুরীজীবি যারা তাদেরও বছরে এই একটি সময় বোনাসপ্রাপ্তি ঘটে। ফলে এই পুজোর সময় কিছু বাড়তি লভ্যাংশের মুখ দেখতে ব্যবসায়ীরা চাকুরীজীবিদের উপর নির্ভর করেন। ব্যাতিক্রম নয় শিল্পাঞ্চল দুর্গাপুরও। শিল্পনগরীর অর্থনীতির মেরুদন্ড হল দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানা। অর্থনৈতিক পরিকাঠামো অনেকটাই নির্ভর করছে মূলতঃ এই কারখানার উপর আর পাশাপাশি রয়েছে অ্যালয় স্টিল প্ল্যান্টও। স্বভাবতইঃ এই শহরের ব্যবসায়ীরাও এই কারখানাগুলির শ্রমিকদের উপরেও অনেকটাই নির্ভরশীল। দুর্গাপুজার বোনাস পাওয়া মাত্রই এই শহরের বিভিন্ন মার্কেট, শপিংমলগুলির দোকানে ভিড় উপচে পড়ে কেনাকাটার জন্য। কিন্তু চির পরিচিত এই চিত্রটা এবার বোধহয় পালটে যেতে চলেছে। প্রতিবছরই পুজোর বোনাস কত হবে তা নিয়ে এই কারখানার শ্রমিক সংগঠনের প্রতিনিধিরা দিল্লি যান কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করে তা স্থির করতে। আর তারপরেই পুজোর ঠিক আগে শ্রমিকদের বোনাস পৌঁছে যায় তাদের স্যালারি অ্যাকাউন্টে। এ বছরও তেমনই দিল্লিতে কর্তৃপক্ষের সাথে শ্রমিক সংগঠনগুলির প্রতিনিধিদের বৈঠক হয় ২৪ সেপ্টেম্বর অর্থাৎ গতকাল শনিবার। কিন্তু অবাক করা ঘটনা সেই বৈঠকে কোনো সিদ্ধান্ত না হওয়ায় পরবর্তী বৈঠকের দিন স্থির করা হয়েছে অক্টোবর মাসের ১০ তারিখে। অর্থাৎ দুর্গাপুজা শেষ হয়ে যাওয়ার পরে। এদিকে এই বিষয়টি জানার পরেই প্রবল ক্ষোভ অসন্তোষ ছড়িয়ে পড়ে শ্রমিক মহলে। তাদের অভিযোগ দুর্গাপুজার বোনাস দুর্গাপুজাতেই দেওয়া হয়। এত বছর ধরেই তা হয়ে এসেছে। কেন এ বছর দুর্গাপুজার বোনাস পুজোর মধ্যে দেওয়া হবে না? তাহলে এটাকে কি পুজোর বোনাস বলা যাবে? শ্রমিক মহলের একাংশের অভিযোগ এটি ষড়যন্ত্র কর্তৃপক্ষের। তারা বলেন পশ্চিমবাংলায় কারখানা আর সেই রাজ্যের বড় উৎসব বাঙ্গালীদের দুর্গাপুজা। কিন্তু কেন্দ্র সরকার বাঙ্গালীর সংস্কৃতিকে প্রাধান্য না দিয়ে অবাঙ্গালী সংস্কৃতিকে চাপানোর চেষ্টা করছে। কেন্দ্র সরকার এই রাজ্যের সব থেকে বড় উৎসব দুর্গাপুজাকে গুরুত্ব না দিয়ে দেওয়ালিকে বেশি প্রাধান্য দিচ্ছে।