সিটি সেন্টার থেকে বেসরকারী কারখানার জিএমের রহস্যজনক নিখোঁজ ঘিরে ক্রমশ দানা বাঁধছে রহস্য
আমার কথা, পশ্চিম বর্ধমান, ৬জুলাইঃ
২৪ ঘন্টা পেরিয়ে গেলেও এখনও খোঁজ মিলল না নিরুদ্দেশ ব্যক্তি রাজেশ জৈনের। রবিবার দুপুরে দুর্গাপুরের জাংশন মলে চুল কাটাতে যাওয়ার কথা বলে বাড়ি থেকে বেরোলেও তারপর আর বাড়ি ফেরেননি ওই ব্যাক্তি। তবে পুলিশ সুত্রে জানা গেছে, মল থেকে বেরিয়ে ওই ব্যাক্তি একটি অটোতে চেপে সিটি সেন্টার বাস স্ট্যান্ডে যান। তারপর থেকে এখনো পর্যন্ত্য তাঁর আর কোনো খোঁজ মেলেনি। পুলিশ ওই অটোচালককে জিজ্ঞাসাবাদ করছে। নিখোঁজ ওই ব্যাক্তির স্ত্রীর কাছে অপহরনের কথা জানিয়ে ফোন এসেছিল বলে পুলিশ সুত্রে জানা গেছে। ঘটনা বেশ চাঞ্চল্য ফেলেছে শিল্পাঞ্চলে। জোর কদমে তদন্ত শুরু করেছে দুর্গাপুর থানার পুলিশ।
দুর্গাপুরের ফরিদপুর ফাঁড়ির অন্তর্গত ৫৪ফুট এলাকায় ‘ন্যাচারাল হাইটস’ নামে বহুতল আবাসনে পরিবার নিয়ে বসবাস করেন রাজেশ জৈন। এছাড়াও রাজেশবাবু বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুরে একটি বেসরকারী ফেরো অ্যালয় কারখানার জেনারেল ম্যানেজার। পুলিশ সুত্রে জানা গেছে, গতকাল অর্থাৎ রবিবার দুপুর ১২টার পর তিনি বাড়ি থেকে জাংশল মলে একটি স্যালোঁতে চুল কাটাতে যাচ্ছেন বলে বাড়ি থেকে বের হন। এরপর বেশ কিছুটা সময় পেরিয়ে গেলেও তিনি ঘরে না ফেরায় তাঁর স্ত্রী তাঁকে মোবাইলে বার বার ফোন করলেও তিনি ফোন তোলেন না। এরপর সন্ধ্যের দিকে রাজেশবাবুর মোবাইল নাম্বার থেকে তাঁর স্ত্রীর কাছে একটি ফোন আসে। ফোনের অপর প্রান্ত থেকে বাংলা ভাষায় কিছু কথা রাজেশবাবুর স্ত্রীকে বলা হয়। কিন্তু রাজেশবাবুর স্ত্রী বাংলা ভাষা বুঝতে পারেন না বলে ওই ব্যাক্তি রাজেশবাবুর জন্য কোনো মুক্তিপন চেয়েছে কিনা তা নিশ্চিত হয়ে বলতে পারছেন না তিনি। তবে ফোনের অপর প্রান্তের ওই ব্যাক্তি একবার অপহরন কথাটা উচ্চারন করেছিলেন সেটি তিনি বুঝতে পারেন। এরপর দিশেহারা রাজেশবাবুর স্ত্রী তাঁর আত্মীয়দের বিষয়টি জানালে তারাই পুলিশে খবর দেয়।
বিষয়টি জানার পর দুর্গাপুর থানার পুলিশ তদন্তে নেমে জাংশন মল সহ আশেপাশের সমস্ত সিসিটিভি ফুটেজ খুঁটিয়ে দেখে। পুলিশ সুত্র আরো জানা গেছে যে, সিসিটিভিতে রাজেশবাবুর জাংশন মলে ঢোকার ছবি দেখা যায়। এরপর মল থেকে বেরিয়ে একটি অটোতে চেপে যেতেও দেখা যায় রাজেশবাবুকে। সেই সুত্র ধরে ওই অটোচালককে থানায় ডেকে পাঠায় পুলিশ। তাঁর থেকেই জানতে পারে পুলিশ যে, অটোতে চেপে সিটি সেন্টার বাস স্ট্যান্ড যান রাজেশবাবু আর সেখানে গিয়ে তিনি অটোর ভাড়া মিটিয়ে দিয়ে অটোটি ছেড়ে দেন। এরপর থেকে তাঁর আর কোনো হদিশ নেই।
এখন এই ঘটনায় উঠছে নানা প্রশ্ন। এটি কি আদৌ অপহরন? যদি অপহরনই হয় তাহলে সিটি সেন্টার বাস স্ট্যান্ডের মতো এত জনবহুল জায়গা থেকে ওই ব্যাক্তি অপহৃত হয়ে গেলেন অথচ কারুর চোখে তা পড়ল না? সাথে এত প্রশ্ন উঠছে একজন কারখানার জেনারেল ম্যানেজার যার নিজস্ব গাড়ি রয়েছে, তিনি সেই গাড়ি ব্যবহার না করে কেন অটোতে চাপতে গেলেন আর অটোতে করে কেনই বা বাস স্ট্যান্ডে গেছিলেন? স্বভাবতই এত সব প্রশ্নের মধ্যে দিয়ে ক্রমশই ঘনীভূত হচ্ছে রহস্য। ফলে ওই ব্যাক্তির রহস্যজনক নিখোঁজ নিয়ে বেশ আলোড়ন ফেলেছে শহর দুর্গাপুরের বাসিন্দাদের মধ্যে।