জেলা পরিষদের উদ্যোগে তৈরী হচ্ছিল রাস্তা, বন্ধ করলো ইসিএল
আমার কথা, লাউদোহা, ১৩ ফেব্রুয়ারী:
জেলা পরিষদের উদ্যোগে তৈরি হচ্ছিল পাকা রাস্তা, নির্মাণ কাজ বন্ধ হয়ে গেল ইসিএল এর আপত্তিতে। হয় রাস্তা নির্মাণে ছাড়পত্র অথবা বিকল্প রাস্তার দাবিতে মঙ্গলবার উৎপাদন পরিবহন বন্ধ করে ঝাঁঝরা কোলিয়ারিতে বিক্ষোভ দেখালো স্থানীয়রা।
মাধাইগঞ্জ মোড় হয়ে লাউদোহা আসা যাওয়া করতে হয় প্রতাপপুর, জামগড়া, বেসিয়া এলাকার বাসিন্দাদের। এই রাস্তা দিয়ে যাতায়াতের জন্য সময় লাগে অনেক বেশি। কিন্তু লাউদোহা মোড় থেকে একটি কাঁচা সড়ক রয়েছে যে পথ ধরে অনেক কম সময়ে ওইসব জায়গায় আসা যাওয়া করা যায়। বহু বছর আগে এই কাঁচা সড়কটিই ছিল যাতায়াত করার মূল রাস্তা। সরকারি ম্যাপে এখনো সেই রাস্তাটির অস্তিত্ব রয়েছে। স্থানীয় মানুষের সুবিধার কথা ভেবে সম্প্রতি জেলা পরিষদের এসআরডিএ প্রকল্পে ওই কাঁচা সড়কটি পিচ রাস্তা করার কাজ শুরু হয়। কাজটির জন্য জেলা পরিষদের এসআরডিএ দপ্তর ২ কোটি ৪৫ লাখ ৫৭ হাজার ৮৮৮ টাকা বরাদ্দ করে। অর্ধেক রাস্তার নির্মাণের কাজ শেষ হয়েছে। এমন অবস্থায় গতকাল সোমবার ইসিএলের ঝাঁঝরা কোলিয়ারির পক্ষ থেকে রাস্তাটি নির্মাণে আপত্তি করা হয়। বন্ধ করে দেওয়া হয় নির্মাণ কাজ। ইসিএল এর এই পদক্ষেপে ক্ষোভ চড়মে উঠেছে স্থানীয়দের। আজ মঙ্গলবার সকাল ৯ টা নাগাদ সংশ্লিষ্ট এলাকার প্রায় পাঁচশ বাসিন্দা ঝাঁঝরা কোলিয়ারিতে এসে জমায়েত হয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। বিক্ষোভের জেরে বন্ধ হয়ে যায় কোলিয়ারির উৎপাদন ও কয়লা পরিবহন ব্যবস্থা। বিক্ষোভকারীদের পক্ষে প্রবীর ঘোষ, ভাগ্যধর পাল-রা জানান বিডিও অফিস, ভূমি দপ্তর, বন দপ্তর, রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক, স্কুল সবই লাউদোহাতে অবস্থিত। তাই বিভিন্ন প্রয়োজনে কমবেশি প্রতিদিনই প্রতাপপুর, জামগড়া, বেসিয়া এলাকার মানুষকে লাউদোহাতে আসতে হয়। মাধাইগঞ্জ মোড় হয়ে মূল রাস্তাটি ধরে আসা, যাওয়া করতে সময় লাগে অনেক বেশি। তুলনাই কাঁচা রাস্তাটির দূরত্ব কম, আসা যাওয়ার জন্য সময় কম লাগে। এটি পিচ রাস্তা হলে সংশ্লিষ্ট এলাকার মানুষজনের সুবিধা হবে। জেলা পরিষদের উদ্যোগে সেই কাজ হচ্ছিল। অজানা কারণে কোলিয়ারি কর্তৃপক্ষ তা বন্ধ করে দিয়েছে। কাজ বন্ধ করার সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করে দ্রুত কাজ শুরু করার অনুমতি দেওয়ার দাবিতেই বিক্ষোভে সামিল হয়েছি বলে জানান তারা।
অন্যদিকে, সংস্থার আধিকারিক সূত্রে জানা গেছে যে জমির উপর রাস্তা তৈরি হচ্ছে সেই জমি ইসিএলের। সেটি সাব সাইড এরিয়া। রাস্তা নির্মাণের জন্য সংস্থার কাছ থেকে সংশ্লিষ্ট দপ্তর কোন ছাড়পত্র নেয়নি। তাছাড়া সাব সাইড জমিতে রাস্তা নির্মাণ ঝুঁকিপূর্ণ। তাই রাস্তা নির্মাণের কাজ বন্ধ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ সুজিত মুখোপাধ্যায় বলেন ইসিএল এর পদক্ষেপ দুর্ভাগ্যজনক। আপত্তি থাকলে তা আগেই জানানো উচিত ছিল। এখন অর্ধেক রাস্তা নির্মাণের কাজ হয়ে গেছে। এই অবস্থায় কাজ করতে দেওয়া না হলে সরকারি টাকার অপচয় হবে। দুর্গাপুর-ফরিদপুর (লাউদোহা) পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি কল্যাণ সৌমন্ডল বলেন সংশ্লিষ্ট কোলিয়ারি কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করে সমাধান সূত্র বের করা হবে।