গরমে হাঁসফাঁস করতে করতে জল পানের পরেই মৃত্যু টোটোচালকের
আমার কথা, দেবনাথ মোদক, বাঁকুড়া, ১১ জুনঃ
দিনেদুপুরে গরমের মধ্যে অস্বাভাবিক মৃত্যু হল এক যুবকের। মঙ্গলবার এ নিয়ে চাঞ্চল্য বাঁকুড়ার পাঁচবাগা এলাকায়। স্থানীয় সূত্রে খবর, দুপুরে পাঁচবাগা মোড়ের অদূরে ওই যুবককে একটি টোটোতে গুরুতর অসুস্থ ও সংজ্ঞাহীন অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন স্থানীয়েরা। বাঁকুড়ার উপ-পুরপ্রধান হীরালাল চট্টরাজের তত্ত্বাবধানে স্থানীয়েরা তাঁকে উদ্ধার করে বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজে নিয়ে যান। কিন্তু চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
পুলিশ সূত্রে খবর, মৃতের নাম শোভন পুজারু। বয়স ৪০ বছর। মৃতের পরিবারের দাবি, অতিরিক্ত গরমে হিটস্ট্রোকের কারণেই মৃত্যু হয়েছে ওই যুবকের। যদিও হাসপাতালের তরফে বলা হচ্ছে, ময়নাতদন্তের পর মৃত্যুর কারণ জানা যাবে।
স্থানীয় সূত্রে খবর, শোভন বাঁকুড়ার ইন্দপুর ব্লকের পায়রাচালি গ্রামের বাসিন্দা হলেও তিনি থাকতেন বাঁকুড়া শহর লাগোয়া আঁচুড়ি গ্রামের এক আত্মীয়ের বাড়িতে। পেশায় তিনি টোটোচালক। আর পাঁচটা দিনের মতো মঙ্গলবার সকালে টোটো নিয়ে বাঁকুড়া শহরে আসেন। পাঁচবাগা এলাকার বাসিন্দাদের দাবি, প্রবল গরমে টোটো চালানোর মাঝে পাঁচবাগা মোড় সংলগ্ন একটি টিউবওয়েল থেকে জল খান ওই যুবক। তার পর ওই টোটোতেই বসে ছিলেন। পড়ে যান সেখানেই। স্থানীয়দের নজরে আসতে তাঁরা বাঁকুড়ার উপ-পুরপ্রধান হীরালাল চট্টরাজকে বিষয়টি জানান। পরে তাঁর তত্ত্বাবধানে স্থানীয় বাসিন্দারা প্রথমে স্থানীয় একটি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে বাঁকুড়ার সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজে নিয়ে যাওয়া হয় তাঁকে। সেখানেই চিকিৎসকেরা ওই যুবককে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
মৃতের এক আত্মীয় নিতাই ধীবর বলেন, ”থানা থেকে ফোন করে আমাকে জানানো হয় শোভন হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েছে। ওকে বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি করানো হয়েছে। আমরা তড়িঘড়ি হাসপাতালে গিয়ে দেখি শোভন মারা গিয়েছে! আমাদের ধারণা, অতিরিক্ত গরম আর চড়া রোদের মধ্যেই ওর মৃত্যু হয়েছে।” এ নিয়ে বাঁকুড়া পুরসভার উপ-পুরপ্রধান হীরালাল চট্টরাজ বলেন, ”টেলিফোনে খবর পাই এক যুবক একটি টোটোর মধ্যে সংজ্ঞাহীন অবস্থায় পড়ে রয়েছে। পুলিশকে খবর দেওয়ার পাশাপাশি নিকটবর্তী স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ওই যুবককে নিয়ে যেতে বলি। সেখান থেকে চিকিৎসকরা ওই যুবককে বাঁকুড়া মেডিক্যালে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন। সেখানে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।” তাঁর সংযোজন, ”আমার মনে হচ্ছে, প্রবল গরমে টোটো চালানোর মাঝে রাস্তার ধারে টিউবওয়েল থেকে জলপান করার পর হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে ওঁর মৃত্যু হয়েছে।”
যদিও যুবকের আকস্মিক মৃত্যু নিয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এখনই কিছু বলছেন না। বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজের সুপার সপ্তর্ষি চট্টোপাধ্যায় বলেন, ”ওই রোগীকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়েছিল। যা গরম পড়েছে তাতে হিট স্ট্রোকে মৃত্যু কোনও অস্বাভাবিক ঘটনা নয়। তবে ময়নাতদন্তের পর মৃত্যুর কারণ জানা সম্ভব হবে।”