খান্দরা পঞ্চায়েতে নতুন উপপ্রধান হলেন তৃণমূলের আশীষ ভট্টাচার্য
আমার কথা, অন্ডাল, ৩ আগস্ট:
খান্দরা পঞ্চায়েতে নতুন উপপ্রধান নির্বাচিত হলেন তৃণমূলের আশীষ ভট্টাচার্য। আগের উপপ্রধান গণেশ বাদ্যকর ইস্তফা দেওয়ায় নতুন করে উপপ্রধান নির্বাচন হয় শনিবার। এদিনের নির্বাচন প্রক্রিয়ায় ২৩ জনের মধ্যে ১৫ জন সদস্য উপস্থিত ছিলেন। তারা সকলকেই উপপ্রধান হিসেবে আশিষ ভট্টাচার্যকে সমর্থন করেন।
গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে অন্ডাল ব্লকের খান্দরা গ্রাম পঞ্চায়েতে ২৩ টি আসনের মধ্যে কুড়িটি আসন জিতে বোর্ড গঠন করেছিল তৃণমূল। প্রধান নির্বাচিত হয়েছিলেন অপর্ণা বাদ্যকর। আর উপপ্রধান পদ পেয়েছিলেন গণেশ বাদ্যকর। প্রধান পদটি সর্বসম্মতিক্রমে হলেও উপপ্রধানের জন্য ভোটাভুটি হয় সেবার। এই পদে দলীয় প্রার্থী আশীর ভট্টাচার্যকে পরাজিত করে উপপ্রধান হন গণেশ বাবু। তখনই অভিযোগ ওঠে গণেশ বাবু তৃণমূলের একাংশের সাথে সিপিএমের নির্বাচিত তিনজন সদস্যের সমর্থন পেয়ে উপপ্রধান হয়েছেন। সিপিএমের সাথে যোগ সাজোশের অভিযোগ ওঠে গণেশ বাবুর বিরুদ্ধে । যদিও বরাবরই সিপিএমের সমর্থনের কথা অস্বীকার করেছেন তিনি । বোর্ড গঠনের পর থেকে গণেশ বাবুর বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগে সরব হন দলের ওপর গোষ্ঠী। গণেশ বাবুর বিরুদ্ধে স্বজনপোষণ, স্বেচ্ছাচার, সিপিএমের লোকজনকে পঞ্চায়েত থেকে সুবিধা পাইয়ে দেওয়া সহ একাধিক অভিযোগে প্রকাশ্যেই ক্ষোভ উগড়ে দিতে দেখা যায় তাদের। উপ প্রধানের ইস্তফার দাবিতে জুন মাসের ১৯ ও ২৪ তারিখ পঞ্চায়েত অফিসের গেটে তালা বন্ধ করে বিক্ষোভ দেখান দলের ওপর গোষ্ঠীর সদস্যরা। ৩০ শে জুন পঞ্চায়েত অফিস সহ খান্দরা গ্রামের বিভিন্ন জায়গাতে “উপপ্রধান চোর” লেখা পোস্টার পরে। বিষয়টি নিয়ে দলের মধ্যে তৈরি হয় অস্বস্তিকর পরিবেশ। অচল অবস্থা সৃষ্টি হয় পঞ্চায়েতের কাজকর্মে। বিষয়টি নিয়ে হস্তক্ষেপ করতে আবেদন জানানো হয় দলের ব্লক সভাপতি ও জেলা সভাপতি কে। দুপক্ষের সাথে কথা বলে গণেশকে উপপ্রধান পথ থেকে ইস্তফা দিতে নির্দেশ দেওয়া হয় দলের পক্ষ থেকে। এক প্রকার বাধ্য হয়ে ১-লা জুলাই উপপ্রধান পদ থেকে ইস্তফা দেন গণেশ বাবু।
শনিবার খান্দরা গ্রাম পঞ্চায়েতে নতুন করে উপপ্রধান নির্বাচন প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হয়। পিসাইডিং অফিসার ছাড়াও এই প্রক্রিয়ায় উপস্থিত ছিলেন ব্লক অফিসের পিডিও মোহাম্মদ এশার আলী। ২৩ জন সদস্য এর মধ্যে গণেশ বাবু সহ তৃণমূলের পাঁচজন ও সিপিএমের তিনজন সদস্য অনুপস্থিত ছিলেন উপপ্রধান নির্বাচন প্রক্রিয়াতে সুত্র মারফত জানা যায় উপস্থিত ১৫ জন সদস্য উপপ্রধান হিসেবে আশিষ ভট্টাচার্যকে সমর্থন জানান। হলে সর্বসম্মতিক্রমে আশীষ বাবু উপপ্রধান নির্বাচিত হন। নির্বাচন প্রক্রিয়ার শেষের পর আশীষবাবুর অনুগামীরা সবুজ আবির মেখে উৎসব পালন করেন পঞ্চায়েত অফিসের বাইরে। সেখানে উপস্থিত ছিলেন রানীগঞ্জের তৃণমূল বিধায়ক তাপস বন্দ্যোপাধ্যায়, দলের অন্ডাল ব্লক সভাপতি কালোবরণ মন্ডল সহ অন্যরা। কালোবরণ বাবু বলেন দলীয় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আশীষ বাবু উপপ্রধান নির্বাচিত হয়েছেন। জটিলতার সমাপ্তি ঘটেছে। এবার সবাই একসাথে মিলে এলাকার উন্নয়নের জন্য কাজ করবে বলে জানান তিনি।