জেলা সভাপতির বিরুদ্ধে ক্ষোভে দুর্গাপুর পশ্চিমে নির্দল প্রার্থী হলেন বর্ষীয়ান কংগ্রেস নেতা
আমার কথা, পশ্চিম বর্ধমান(দুর্গাপুর), ৭এপ্রিলঃ
মাত্র দিন চারেক হয়েছে বেশ উৎসবের মেজাজে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন দুর্গাপুর পশ্চিম কেন্দ্রের সংযুক্ত মোর্চার প্রার্থী তথা জাতীয় কংগ্রেসের জেলা সভাপতি দেবেশ চক্রবর্তী। কিন্তু সেই সময় তিনি ঘূণাক্ষরেও বোঝেননি যে দিন কয়েক পরেই কি গেরো অপেক্ষা করছে তাঁর জন্য। মোটামুটি জয় নিশ্চিত এমনটা ধরে নিয়েই (২০১৬ সালের অভিজ্ঞতা) বেশ ফুরফুরে মেজাজে তিনি পুরোদমে প্রচারে নেমে পড়েছিলেন। এরই মধ্যে ছন্দপতন। তাঁর প্রতি এক রাশ ক্ষোভ উগরে দিয়ে ওই একই কেন্দ্রে নির্দল প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা করলেন প্রদেশ কংগ্রেসে সদ্য প্রাক্তন সদস্য স্বপন ব্যানার্জী।
স্বপন ব্যানার্জী, মুর্শিদাবাদের ভূমিপুত্র হলেও দীর্ঘদিন হল তিনি দুর্গাপুরে বসবাস করছেন। ১৯৬৯ সালে ছাত্রাবস্থায় তিনি জাতীয় কংগ্রেসে যোগ দিয়েছিলেন। পরবর্তীকালে দুর্গাপুরে এসে ১৯৭৫ সালে যুব কংগ্রেসের সাধারন সম্পাদক হন। এরপর দলের নানা দায়িত্ব পালনের মধ্যে দিয়ে তিনি প্রদেশ কংগ্রেসে সদস্য হিসেবে কাজ করে যাচ্ছিলেন। এহেন একজন অভিজ্ঞ ও বর্ষীয়ান কংগ্রেস নেতার সাথে কি এমন ঘটনা ঘটল যার জন্য তিনি কংগ্রেসের জেলা সভাপতি তথা সংযুক্ত মোর্চার প্রার্থীর পাশে না দাঁড়িয়ে তাঁর বিপক্ষে দাঁড়াতে চলেছেন।
এ বিষয়ে স্বপনবাবু অভিযোগ, একুশের এই লড়াইতে তিনি সংযুক্ত মোর্চার একজন সেনা হিসেবে নিজের মনোনয়ন দিতে চেয়ে জেলা সভাপতি (দেবেশ চক্তবর্তী)-র সাথে যোগাযোগ করেন। কিন্তু তিনি বিভিন্ন বাহানায় বিষয়টি এড়িয়ে যান। এরপর তিনি সেই মনোনয়ন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীর কাছে পাঠান, যা নাকি দিল্লি পর্যন্ত্যও যায়। কিন্তু কোনো এক অজানা কারনে প্রার্থী হিসেবে তাঁর নয়, বরং নাম ঘোষণা হয় দেবেশ চক্রবর্তীর। শুধু তাই নয়, স্বপনবাবু জানান দুর্গাপুরে তিনি ও সুদেব রায় প্রদেশ কংগ্রেসের পুরোনো সদস্য হলেও যখন নির্বাচনী সংক্রান্ত এক বৈঠক হয় সিটিসেন্টারের এক বেসরকারী হোটেলে, তখন তাঁরা অনাহুতই থেকে যান সেই বৈঠকে যেখানে উপস্থিত ছিলেন এই জেলার পর্যবেক্ষক। পাশাপাশি তাঁর আরো অভিযোগ, ২০১৬-র নির্বাচনেও তাঁর নাম প্রার্থী হিসেবে এসেছিল কিন্তু শেষমেশ জোট প্রার্থী হিসেবে কংগ্রেসের টিকিটে দাঁড় করানো হয় তৎকালীন তৃণমূল কাউন্সিলর বিশ্বনাথ পাড়িয়ালকে। ঘটনাচক্রে তখনও জেলা সভাপতির দায়িত্বে ছিলেন দেবেশ চক্রবর্তী।
স্বপনবাবুর অভিযোগ তিনি দীর্ঘদিন ধরে কংগ্রেস করছেন। ছাত্র সংগঠন থেকে শুরু করে যুব সংগঠন, এমন কি শ্রমিক সংগঠনের মতো বড় বড় সংগঠন সামলোর মতো অভিজ্ঞতা থাকলেও আজ তিনি বঞ্চনার শিকার হচ্ছেন। তাই তিনি এহেন পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হয়েছেন বলে জানান। তবে স্বপনবাবু এও বলেন যে, তিনি দলকে ভালবাসেন তাই দলের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা তিনি করবেন না বলেই দলের সমস্ত পদ এমনকি প্রাথমিক সদস্য পদও ছেড়ে দিয়ে তবেই নির্দল হিসেবে মনোনয়ন জমা করলেন তিনি।
যের বিরুদ্ধে স্বপনবাবুর এই ক্ষোভ সেই দেবেশ চক্রবর্তী বলেন, “প্রার্থী কে হবে তা জেলা স্তরে নয় এটি প্রদেশ এবং দিল্লি থেকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তবে উনি যদিও তাও প্রতিদ্বন্দ্বি হিসেবে দাঁড়াতে চান তাহলে আমার তরফ থেকে শুভেচ্ছা রইল।