ছেলেধরা গুজবের শিকার হলেন অসুস্থ শিশুর বাবা, জুটলো গণপিটুনি
আমার কথা, কাঁকসা, ১৯ জুলাইঃ
রাজ্য জুড়ে ছেলে ধরার আবহাওয়া চলছে। কোথাও শিশু চুরি করতে গিয়ে কেউ কেউ ধরাও পড়ছে আবার কোথাও কেউ সুধুমাত্র গুজবের শিকার হচ্ছেন। এরকমই একটি ঘটনা ঘটল কাঁকসা থানা এলাকায়। শিশু চোরের অপবাদে জনরোষের শিকার হলেন এক অসুস্থ শিশুর বাবা।
অসুস্থ শিশুকে নিয়ে ডাক্তার দেখাতে বেরিয়ে জনরোষের শিকার হলেন বীরভূমের ইলামবাজারের এক বাসিন্দা। শুক্রবার সকালে বীরভূমের ইলামবাজার এলাকার বাসিন্দা সেখ আইয়ারুল তাঁর অসুস্থ শিশুকে চিকিৎসা করানোর জন্য কাঁকসা ১১ মাইলে নিয়ে আসছিলেন। পথে বিলপাড়ায় বুন্ধুদের সাথে দেখা হলে তিনি রাস্তায় দাঁড়িয়ে বন্ধুদের সাথে কথা বলছিলেন। কথাবার্তার পর যখন তিনি ফের বাইকে করে নিজের ছেলেকে নিয়ে রওনা দেন সেই সময় আচমকাই এলাকার কয়েকজন ব্যাক্তি সেখ আইয়ারুলের পথ আটকায় সাথে তাঁকে ছেলেধরা সন্দেহে মারধর করতে শুরু করে। ঘটনার সময় তিন বন্ধু ওই ব্যক্তিকে উদ্ধার করার চেষ্টা করলে। তাদেরও মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। এদিকে ছেলে ধরা পাওয়ার খবর চাউর হতেই আশেপাশের এলাকা থেকে বহু মানুষ ভিড় করেন এলাকায়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে কাঁকসা থানার পুলিশ দ্রুত পৌঁছে ওই চার ব্যক্তি সহ শিশুটিকে উদ্ধার করে নিয়ে যায় থানায়।
কাঁকসা থানায় উদ্ধার হওয়া ওই শিশু সহ চারজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ জানতে পারে ওই শিশুকে নিয়ে তার বাবা নিজেই চিকিৎসকের কাছে চিকিৎসা করাতে বেরিয়েছিলেন। এরপরই মাঝ রাস্তায় এলাকার মানুষের জনরোষের শিকার হন তিনি। ওই শিশুর পরিবারে খবর দেওয়া হলে সঠিক পরিচয় পত্র নিয়ে কাঁকসা থানায় আসেন পরিবারের সদস্যরা। সচিত্র পরিচয় পত্র দেখিয়ে শেষমেশ রেহাই মেলে সকলের।
শেখ আইয়ারুল জানিয়েছেন, সকাল থেকেই তার শিশুর পেটে অসহ্য যন্ত্রণা শুরু হয়। যার জন্য তিনি মোটরসাইকেল নিয়ে চিকিৎসকের কাছে চিকিৎসা করানোর জন্য বেরিয়েছিলেন মাঝ রাস্তায় কাঁকসার বিল পাড়ায় তারই এলাকার কয়েকজনের সাথে দেখা হয়।। সেখানে দাঁড়িয়ে কিছুক্ষণ কথা বলার পর তিনি রাস্তার ধারে জঙ্গলে বাথরুম করেন। এরপর তার শিশুকে কোলে নেওয়ার সময় পেটের যন্ত্রণায় তার শিশু কান্নাকাটি শুরু করলে স্থানীয়রা সন্দেহ করে অন্যের শিশুকে চুরি করতে এসেছে তারা।। সেই সন্দেহ বসে বেশ কয়েকজন ছুটে এসে তাদের ধরে স্থানীয় একটি হোটেলের আটকে মারধর শুরু করে। এর পরেই খবর চাউর হতেই একের পর এক মানুষ সেখানে জড়ো হয় এবং তারাও তাদের মারধর শুরু করে। যদিও বেশ কিছুক্ষনের মধ্যেই ঘটনাস্থলে পুলিশ পৌঁছে তাদের উদ্ধার করে নিয়ে আসে। যদি সঠিক সময় পুলিশ ঘটনাস্থলে না পৌঁছতো তাহলে হয়তো তাদের চারজনকেই পিটিয়ে মেরে ফেলা হতো।। কাঁকসা থানার পুলিশ সূত্রে জানা গেছে সঠিক পরিচয় পত্র পাওয়ার পর সকলকে ছেড়ে দেওয়া হলেও গণধোলাইয়ের সাথে যারা যুক্ত ছিল তাদের চিহ্নিত করে তাদের যথাযথ শাস্তির ব্যবস্থা করবে।