“যখন তখন যে কেউ ঢুকে পড়ছে”, দুর্গাপুরে সরকারী হাসপাতালে নিরাপত্তার অভাব স্বীকার সুপারের
আমার কথা, দুর্গাপুর, ১১ আগস্টঃ
আরজি কর হাসপাতালের মহিলা ডাক্তা্রী পড়ুয়ার খুনের ঘটনায় তোলপাড় রাজ্য। প্রতিবাদে সরব হয়েছেন চিকিৎসক থেকে শুরু করে স্বাস্থ্যকর্মীরা। এই ঘটনার পর রাজ্যের বিভিন্ন সরকারী হাসপাতালগুলির নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন। আদৌ কি হাসপাতালগুলি নিরাপদ? এই প্রশ্ন উঠতেই হাসপাতালগুলির নিরাপত্তা ব্যবস্থার উপর আরো বেশি জোর দেওয়ার দাবি উঠছে।
হাসপাতালে নিরাপত্তার অভাব রয়েছে, যে কেউ যখন তখন হাসপাতালে ঢুকে পড়ছে, কার্যত স্বীকার করে নিলেন দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালের সুপার ডাঃ ধীমান মন্ডল। আরজি করের ঘটনার আগে শহরের একমাত্র এই সরকারী হাসপাতালের নিরাপত্তা নিয়ে সেভাবে ভাবাও হয়নি বলেও জানালেন দায়িত্বপ্রাপ্ত সুপার।
দুর্গাপুর শিল্পাঞ্চলে একটি সরকারী হাসপাতাল এই দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতাল। এই হাসপাতালে উত্তোরত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে রোগীর সংখ্যা। দুর্গাপুর সহ সংলগ্ন এলাকার বহু মানুষ এই হাসপাতালের উপর নির্ভরশীল। এছাড়াও শহরের গা ঘেঁষে গিয়েছে জাতীয় সড়ক। ফলে জাতীয় সড়কের উপর প্রায় সময় দুর্ঘটনা ঘটে আর দুর্ঘটনাগ্রস্থ রোগীকে নিয়ে আসা হয় এই হাসপাতালে। ফলে হাসপাতালে প্রায় ২৪ ঘন্টাই বহিরাগতদের আনাগোনা লেগে রয়েছে। অথচ রোগীর তুলনায় সেভাবে নেই নিরাপত্তারক্ষী। এত বড় হাসপাতালে মোট নিরাপত্তারক্ষীর সংখ্যা ৭৮ যা কেবলমাত্র হাসপাতালের ভিতরের দায়িত্বে রয়েছে। কিন্তু প্রবেশদ্বারে দেখা যায় না কোনো নিরাপত্তারক্ষীকে। যদিও হাসপাতালে রয়েছে সিসিটিভি ক্যামেরা যার পরিসংখ্যান হল ৪৮টি। তবে যখন তখন হাসপাতালের ভিতর ঢুকে পড়ে বহিরাগতরা। এমনকি ভিজিটিং আওয়ারের আগে পরেও হাসপাতালে রোগীর কাছে চলে যেতে দেখা যায় রোগীর পরিবারের একাধিক সদস্যরা। কারা ঢুকছে, তাঁদের আদৌ ভিতরে যাওয়ার অনুমতি রয়েছে কিনা তা সেভাবে খতিয়ে দেখা হয় না বলেও অভিযোগ করছেন অনেকেই। দিনের পর দিন বছরের পর বছর এভাবেই চলছে। এদিকে কলকাতার আর জি কর হাসপাতালে ঘটে গিয়েছে নৃসংশ ঘটনা। আর এই ঘটনার পরেই বলতে গেলে কার্যতঃ হুঁশ ফিরেছে এই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের। যদিও আর জি কর কান্ডের আগে থেকেই নিরাপত্তা বাড়ানোর চিন্তা ভাবনা চলছে বলে দাবি করা হচ্ছে হাসপাতালের পক্ষ থেকে।
তবে প্রশ্ন উঠছে কেন যে কোনো দুর্ঘটনা ঘটে যাওয়ার পরেই প্রশাসন পদক্ষেপ নেন? দুর্ঘটনা যাতে না ঘটে তার জন্য কেন আগে থেকেই ব্যবস্থা নেওয়া হয় না?