রবিশংকরজির উদ্যোগে বিশ্ব সাংস্কৃতিক উৎসবের মাধ্যমে বিশ্বশান্তির বার্তা
আমার কথা, বিশেষ প্রতিনিধি, ১১ অক্টোবরঃ
এক ঐতিহাসিক অনুষ্ঠানের সাক্ষী হয়ে রইলেন ১৮০টি দেশের প্রায় দশ লক্ষেরও অধিক মানুষ আর এই ঐতিহাসিক অনুষ্ঠানের মূল উদ্যোক্তা হল শ্রী রবিশংকরজির “আর্ট অফ লিভিং”। আমেরিকার ওয়াশিংটন শহরে এক বিশ্ব সাংস্কৃতিক উৎসব হয়ে গেল যার পরিসমাপ্তি ঘটে চলতি মাসের ১ তারিখে। নানা বিচিত্রানুষ্ঠান দিয়ে সাজানো হয়েছিলে এই সাংস্কৃতিক উৎসবটিকে। ওয়াশিংটনের আইকনিক ন্যাশানাল মলে আয়োজিত এই বিশ্ব সাংস্কৃতিক উৎসবের মঞ্চ থেকে আগত ভক্তদের উদ্দ্যেশে মূলতঃ সকল হিংসা ও ধর্মান্তরকে ভুলে সকলকে একত্রিত হয়ে বিশ্বশান্তির বার্তা দেওয়া হয়, যার অগ্রনী ভূমিকা নেয় দক্ষিণ এশিয়া, ল্যাটিন আমেরিকা ও ক্যারিবিয়ান আইল্যান্ডের শিল্পীবৃন্দ। তিনদিনের এই উৎসবে নাচ, গান, ধ্যান ও সংস্কৃতিকে সকলের সম্মুখে তুলে ধরা হয়।
এই উৎসবের মূল আকর্ষণ ছিল ইউক্রেনবাসীদের জন্য শ্রী রবিশংকরজির হৃদয়স্পর্শী প্রার্থণা। এছাড়াও শ্রী রবিশংকরজির সাথে প্রায় এক হাজার মানুষ যোগাতে অংশ নেন। পাশাপাশি আরো একটি স্মরণীয় ঘটনা হল এই অনুষ্ঠানে নানা দেশের নেত্রী বর্গের বিশ্ব শান্তির জন্য একত্রিত হয়ে প্রার্থণা।
এই উৎসবে বিশ্বের প্রায় সতেরো হাজার শিল্পী প্রায় ষাটেরও বেশি অনুষ্ঠান করেন। এই অনুষ্ঠানে দেশের নানা বানিজ্যিক, অর্থনৈতিক ও ধার্মিক প্রতিনিধিরা গ্লোবাল কমিউনিটি ও সমবায়ের এক বৃহৎ দৃষ্টিকে সকলের সামনে তুলে ধরেন।
এই উৎসবে ভারতীয় সংস্কৃতির পটে তুলে ধরা হয় পাঁচটি শাস্ত্রীয় নৃত্য(ভারতনাট্যম, কত্থক, ওড়িশি, কুচিপুরী ও মোহিনী আট্যম)। এছাড়াও ২৫০ জন বাদ্যশিল্পী নানা বাদ্যযন্ত্রের মাধ্যমে এক সিম্ফনি তৈরি করেছিলেন। তাছাড়া বিশ্বের নানা দেশের নৃত্য শিল্পীরা তো ছিলেনই তাদের নৃত্য পরিবেশনের জন্য।
“আর্ট অফ লিভিং” এর স্রষ্টা শ্রী রবিশংকরজি বলেন, “আজ আমরা একসাথে থাকার প্রয়োজনীয়তাকে অনুভব করতে পেরেছি। আর আমরা এই ভালো ভাবনাটা তখনই অনুভব করতে পেরেছি যখন বুঝেছি গোটা বিশ্ব আসলে একই পরিবার”।
আর্ট অফ লিভিং এর এই বিশ্ব সাংস্কৃতিক উৎসবের ভূয়সী প্রশংসা করেন ভারতের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ। তিনি বলেন “গুরুদেব আপনি এই ক্ষুদ্র পৃথিবীতে এক বিশ্ব পরিবার গড়ে তুলেছেন। এছাড়াও ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডক্টর এস জয়শঙ্কর, ইউনাইটেড নেশনস এর অষ্টম সাধারণ সভাপতি এইচ. ই বান কি মুন, ভারতের লোকসভার প্রাক্তন স্পিকার সুমিত্রা মহাজন, ইউএস সার্জেন্ট জেনারেল ডক্টর বিবেক মূর্তি, ডিসির মেয়র মুড়িল বাউসের, মিস্টার হাকুবান শিমুরা জাপানের এমপি, এরিক সল হেইম ইলেকশন প্রাক্তন ইউএন ডেপুটি সেক্রেটারি জেনারেল এবং এক্সিকিউটিভ ডাইরেক্টর অফ ইউ এন ই পি এনারা প্রত্যেকে আর্ট অফ লিভিং এর এই বিশ্ব সাংস্কৃতিক উৎসবের মাধ্যমে বিশ্ব ব্যাপী শান্তির বার্তা ছড়িয়ে দেওয়ার উদ্যোগকে সাধুবাদ জানান। সর্বশেষে সাহিব সৎপাল সিং খালসা বলেছেন- ” আমাদের অবশ্যই চিনতে হবে একত্রিকরণে সেই সাধারণ সুতোকে যা সকল দেশের সীমাকে অতিক্রম করে আমাদের একসূত্রে গেঁথে রাখে। একতা এবং সহমর্মিতা হল চির নিবিড় শান্তির অন্যতম পথ।”