গরুপাচারের আড়ালে অস্ত্র ব্যবসা? বাঁকুড়ায় গরুর পাশাপাশি উদ্ধার বন্দুক, ভোজালি
আমার কথা, বাঁকুড়া, ২ ফেব্রুয়ারী:
সংবাদদাতা: দেবনাথ মোদক
গরুপাচার চক্রের আড়ালে অস্ত্রপাচারের ছক? শুক্রবার মধ্যরাতে বাঁকুড়া জেলার তালড্যাংরা এলাকা থেকে গরু-সহ অস্ত্রশস্ত্র উদ্ধারের ঘটনায় এই যোগ আরও স্পষ্ট হল। গরু চুরি করে পালাতে গিয়েও শেষ রক্ষা হল না। জয়পুর ও কোতুলপুর পুলিশের হাতে বমাল ধরা পড়ল দক্ষিণ ২৪ পরগনার রবীন্দ্রনগর থানা এলাকার ৫ দুষ্কৃতী। তাদের কাছ থেকে একটি দেশি বন্দুক-সহ এক রাউন্ড তাজা কার্তুজ, ২টি ভোজালি এবং একগাছি দড়ি। আটক করা হয়েছে ৫টি গরুকেও।
পুলিশ সূত্রে খবর, ধৃতদের মধ্যে অচিন্ত্য রায় নামে ৬০ বছরের এক বৃদ্ধ জয়পুরের বনকাটি গ্রামের বাসিন্দা বলে জানা গিয়েছে। বাকি দুষ্কৃতীদের মধ্যে মোজাম্মেল মণ্ডল, শেখ ইসলাম, সরফরাজ খান ও রঞ্জিত দোলুই দক্ষিণ ২৪ পরগনার রবীন্দ্রনগর থানার বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দা। এদের প্রত্যেকেরই বয়স ১৫ থেকে ১৮ বছরের মধ্যে। ধৃতদের কাছ থেকে অস্ত্র ছাড়াও নগদ ১০,১৮০ টাকা বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।
এদিন বিষ্ণুপুর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মকসুদ হাসান সাংবাদিক সম্মেলন করে জানান, ”কয়েকদিন ধরেই জয়পুর ও কোতুলপুর থানার বিভিন্ন এলাকা থেকে গরু চুরির অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছিল। সেই চক্রকে ধরার জন্য জয়পুর থানা এবং কোতুলপুর থানার পুলিশ যৌথভাবে অভিযান চালাতে থাকে। শুক্রবার আমরা জানতে পারি, দক্ষিণ বাঁকুড়ার তালড্যাংরা এলাকা থেকে দুষ্কৃতীরা বেশ কিছু গরু চুরি করে পালানোর চেষ্টা করছে। তখন জয়পুর থানা এলাকায় নাকা চেকিং বসানো হয়। আনুমানিক রাত সাড়ে ১২টা নাগাদ একটি ছোট লরিকে পুলিশ আটকায়। যার মধ্যে ৫টি গরু-সহ একাধিক ব্যক্তি ছিল। পুলিশ গাড়ি আটকাতেই কয়েকজন ছুটে পালিয়ে যায়। ওই গাড়ি থেকে ৫ জনকে পুলিশ ধরতে পেরেছে। গরু নিয়ে যাওয়ার জন্য বৈধ কোন কাগজ তারা দেখাতে পারেনি। এরপরেই পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করে।”
পুলিশের জেরায় তারা গরু চুরি করে পাচারের কথা কবুল করে বলে জানা যায়। আরও স্বীকার করে যে তাদের সঙ্গে আরও একাধিক ব্যক্তি জড়িত রয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে নির্দিষ্ট ধারায় মামলা রুজু করে ৫ দুষ্কৃতীকে শনিবার বিষ্ণুপুর মহকুমা আদালতে পেশ করা হয়েছে। ওই দুষ্কৃতীদের নিজেদের হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে সম্পূর্ণ পাচার চক্রকে ধরার চেষ্টা করছে বলে জানান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার।