আসানসোলে দেখা মিলল হায়নার, আতঙ্ক
আমার কথা, পশ্চিম বর্ধমান(আসানসোল), ৭ ডিসেম্বরঃ
হায়না ধরা পড়ল আসানসোলের জঙ্গল লাগোয়া এলাকায়। জামুরিয়া লদা গ্রাম চুরুলিয়া পঞ্চায়েত অন্তর্গত লদা গ্রামের ঘনবসতি এলাকা থেকে ধরা হয়েছে স্ট্রাইপড হায়নাটিকে (বিজ্ঞানসম্মত নামঃ হাইনা হাইনা)।
বন দপ্তর সূত্রে খবর, জানা গিয়েছে, লদা গ্রামের মানুষ বুধবার সকালে গ্রাম লাগোয়া মাঠ-জঙ্গল থেকে বিকট ডাক শুনতে পায়। সকালে সেখানে গিয়ে তাঁরা দেখেন, একটা পুকুরের পিছনে পরিত্যক্ত জমিতে শিয়াল আটকানোর জন্য পাতা জালে আটকা পড়েছে হায়নাটি। সঙ্গে সঙ্গে খবর দেওয়া হয় জামুরিয়া থানায় অন্তর্গত চুরুলিয়া ফাঁড়িতে। সেখান থেকে খবর দেয় দুর্গাপুর বন বিভাগকে। সেখান থেকে আসানসোল বনাঞ্চলে এবং আসানসোল বনাঞ্চলের রেঞ্জারের উদ্দেশ্যে। ফরেস্ট অফিসারদের সঙ্গে নিয়ে গৌরাঙ্গি বিট অফিসের এবং সরিষাবলী বিটের দক্ষ কর্মীরা সেখানে যান। পুলিশ ও বন দপ্তরের কর্মীদের যৌথ প্রচেষ্টায় হায়নাটিকে খাঁচাবন্দি করে নিয়ে যাওয়া হয়। চিকিৎসা করে সেটিকে পর্যবেক্ষণে রাখা হবে। তার পর তাকে কোথায় ছাড়া যায়, সে ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবেন বন দপ্তরের কর্তারা।
বনদপ্তরের আধিকারিকরা জানান গ্রামবাসীরা বন দপ্তরকে খবর দিয়ে ঠিক কাজই করেছেন। এই ধরনের মাংসাশী প্রাণী দেখলে সবার আগে ফরেস্ট অফিস বা পুলিশ-প্রশাসনকে জানানোই উচিত। কেউ অযথা তাদের সামনে যাওয়ার চেষ্টা করলে বিপদ হাতে পারে।
প্রসঙ্গতঃ ভারতে, পশ্চিম আফ্রিকার মরক্কো থেকে শুরু করে আরও নানা দেশে পাওয়া যায় এই স্ট্রাইপড হায়না। গোটা বিশ্বে ১০ হাজারের কাছাকাছি স্ট্রাইপড হায়না রয়েছে। এখনই সংরক্ষণের ব্যবস্থা না হলে
বারাবনি , জামুরিয়া বিপন্ন প্রাণীর তালিকায় নাম লেখাবে তারা। বাংলায় এদের দেখা মেলে মূলত পুরুলিয়া, পশ্চিম মেদিনীপুর এবং ঝাড়গ্রামের শুকনো এবং আধা শুকনো জঙ্গলে। আসানসোলে এর আগে তেমন ভাবে এই প্রাণীটির দেখা পাওয়া যায়নি। জঙ্গল কমে যাচ্ছে, কয়লাখনি বেড়ে যাচ্ছে তার ফলে তাদের বাসস্থান কমে যাচ্ছে। ফলে তারা লোকালয়ে ঢুকে পড়ছে। পশ্চিম বর্ধমানের কিছু কিছু জায়গায় কয়লাখনি হচ্ছে বলে সেখানে জঙ্গল কমছে এবং যে এলাকায় জঙ্গল রয়েছে সেইখানে চলে যাচ্ছে হায়না গুলি কিছু এই জেলায় জঙ্গল বেড়েছে বলে নিয়মিত বন্যপ্রাণীরা আসতে শুরু করেছে। জঙ্গলে আরও হায়না থাকারও সম্ভাবনা রয়েছে। জঙ্গল বাড়লেও হায়নাটি কেন লোকালয়ে চলে এল তা খতিয়ে দেখছেন বনকর্তারা।