করোনা মোকাবিলায় দুর্গাপুরবাসীদের দোরগোড়ায় এবার পুরসভা তবুও উঠছে প্রশ্ন
আমার কথা, পশ্চিম বর্ধমান, ২৩এপ্রিলঃ
রাজ্যে ক্রমশ বাড়ছে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা। তাই এবার শুধু হাসপাতালের উপর নির্ভর না করে সরাসরি মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছতে চাইছে স্বাস্থ্যবিভাগ। দিন পাঁচেক ধরে দুর্গাপুর নগর নিগমের স্বাস্থ্যবিভাগের উদ্যোগে পুরসভার অন্তর্গত প্রতিটি বাড়িতে সরাসরি পৌঁছে যাচ্ছেন স্বাস্থ্যকর্মীরা। খোঁজ নিচ্ছেন ওই বাড়িগুলিতে বসবাসকারীদের শরীর স্বাস্থ্য সম্পর্কে। জ্বর কিংবা সর্দি হাঁচি কাশির কোনো উপসর্গ তাদের মধ্যে দেখা দিয়েছে কিনা। শুধু তাই নয় খোঁজ নেওয়া হচ্ছে ইতিমধ্যে তাদের কাছে বাইরের থেকে কোনো ব্যাক্তি এসে বসবাস করতে শুরু করেছেন কিনা। যেমন আজ বৃহস্পতিবার কয়েকজন স্বাস্থ্যকর্মীকে দেখা গেল সিটি সেন্টারের বিভিন্ন এলাকায়।
করোনা সংক্রমন এড়াতে রাজ্যে চলছে লকডাউন। এই লকডাউনে রাজ্যবাসীকে ঘরে থাকার জন্য বার বার আবেদন জানানো হচ্ছে প্রশাসনের পক্ষ থেকে। কিন্তু তারপরেও রাজ্যে বেড়েই চলেছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। শুধু তাই নয় অনেক সময় এরকম ঘটনাও ঘটতে দেখা যাচ্ছে যে কোনো ব্যাক্তির জ্বর সর্দি কাশি হলে সেটি সামান্য বিষয় বলেও তাঁরা ঘরেই থেকে যাচ্ছেন। তাই শিল্পাঞ্চল দুর্গাপুরকে করোনা মুক্ত রাখতে বাড়ি বাড়ি গিয়ে নগরবাসীদের স্বাস্থ্যের খোঁজ নেওয়ার উদ্যোগ নিতে দেখা গেল দুর্গাপুর নগর নিগমকে। মোট ২৬৫জন স্বাস্থ্যকর্মীকে এই কাজে নিয়োগ করা হয়েছে। এক একেক জন স্বাস্থ্যকর্মী প্রতিদিন গড়ে ৫০টি করে বাড়িতে যাচ্ছেন এই সার্ভে করতে। তবে পুরসভার এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানালেও অনেকেই আবার এই প্রশ্নও তুলছেন যে শুধু বাড়িতে এসে মৌখিকভাবে জিজ্ঞেস করলে কি এই সমস্যার সমাধান হবে? কারন কোয়ারেন্টাইনের ভয়েও অনেকেই হয়ত সত্যিটা প্রকাশ করতে ভয় পেতে পারেন। হতে পারে কারুর করোনা সংক্রমনের প্রাথমিক উপসর্গ দেখা দিলেও পরিবারের থেকে আলাদা হয়ে কোয়ারেন্টাইন কিংবা আইসোলেশনের ভয়ে বিষয়টি চেপে যেতে পারেন। তাই এক্ষেত্রে কমপক্ষে থার্মাল টেস্টের ব্যবস্থা করলে সেটা হয়ত বেশী কার্যকরী হতো।
এই বিষয়ে দুর্গাপুর পুরসভার মেয়র পারিষদ(স্বাস্থ্য বিভাগ) রাখী তিওয়ারী বলেন যে, “যতজন স্বাস্থ্যকর্মী কাজ করছেন তাদের প্রত্যেককে দেওয়ার মতো অত সংখ্যক থার্মাল গান আমাদের কাছে নেই। মূলতঃ পরিকাঠামোর অভাবে তা হয়ত সম্ভব হচ্ছে না। তবে মানুষের মনের থেকে ভয় দূর করতে সাথে বিষয়টি নিয়ে সচেতন করতে আপ্রাণ চেষ্টা করছেন ওই স্বাস্থ্যকর্মীরা। তবে আমাদের দুর্গাপুর পুরসভায় প্রায় লাখ দুয়েক বাড়ি রয়েছে। আর এতগুলো বাড়ির তুলনায় স্বাস্থ্যকর্মীর সংখ্যা কম। এতে অনেক বেশি সময় লেগে যাচ্ছে। তাই আমরা জেলাশাসক ও মহকুমা শাসকের সাথে বৈঠক করে সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে ডেঙ্গু প্রতিরোধের পরিষেবার সাথে যুক্ত এরকম দুর্গাপুরে প্রায় ১২০০ জন কর্মী রয়েছেন। তাদেরকেও যদি এই কাজে যুক্ত করে দেওয়া যায় তাহলে তিন দিনের মধ্যেই আমরা পুরসভায় বসবাসকারী সমস্ত মানুষের কাছে আমরা পৌঁছতে পারব।”