দুর্গাপুর বন্দেভারত পেলেও নিত্যযাত্রীদের অবস্থা সেই তিমিরেই
আমার কথা, দুর্গাপুর, ২৫ সেপ্টেম্বর:
ঘটা করে বন্দে ভারত এক্সপ্রেস ট্রেনের বিভিন্ন জায়গায় স্টপেজ এর জন্য উদ্বোধনী অনুষ্ঠান হয়ে গেলেও খুশি নন প্রতিদিন আসানসোল দুর্গাপুর থেকে হাওড়া যাওয়ার ডেলি প্যাসেঞ্জারেরা । এই ট্রেন সাধারণ মানুষের কোন উপকারেই লাগবে না, এই ট্রেন চালু করে নিত্যযাত্রীদের কোন উপকারই হলো না। নতুন ট্রেনের জন্য বছরের পর বছর বারবার আবেদন করা সত্ত্বেও ডেলি প্যাসেঞ্জারদের দাবি মত মিলল না আসানসোল থেকে হাওড়া যাওয়ার কোন লোকাল বা এক্সপ্রেস নতুন ট্রেন তাই তারা এই বিষয়ে চিঠি লিখলেন প্রধানমন্ত্রী সহ রেল মন্ত্রীকে।
পশ্চিমবঙ্গ তার চতুর্থ বন্দে ভারত এক্সপ্রেস ট্রেন পেলো এবং এই ট্রেনটি হাওড়া থেকে পাটনা পর্যন্ত চলবে। ভারতীয় রেলওয়ে, যাত্রীদের জন্য একটি বিলাসবহুল অভিজ্ঞতা প্রদান করলো। বর্তমানে এই ট্রেনটি ৫৩৫ কিলোমিটার দূরত্ব পাড়ি দেবে, আর এর জন্য যা মৌখিকভাবে জানা যায়, সর্বনিম্ন ভাড়ার পরিসীমা ১৪৫০/– থেকে ২৬৫০/- হতে পারে এবং এই দূরত্বটি অতিক্রম করতে সময় লাগবে ছয় ঘণ্টা ত্রিশ মিনিট।
কিন্তু সাধারণ মানুষের কি লাভ হবে? এই প্রশ্ন তুললেন প্রতিদিন দুর্গাপুর থেকে এবং আসানসোল থেকে হাওড়া যাতায়াত করা ডেলি প্যাসেঞ্জারেরা। তারা বলেন আমাদের মতো সাধারণ মানুষদের যারা প্রতিদিন যারা আসানসোল, চিত্তরঞ্জন, দুর্গাপুর থেকে হাওড়া রুটে লোকাল বা এক্সপ্রেস ট্রেনে যাতায়াত করেন তাদের জীবিকার জন্য এবং চিকিৎসার জন্য প্রতিদিন চার থেকে পাঁচ হাজার যাত্রী যাতায়াত করে।
ইতিমধ্যেই হাওড়া থেকে পাটনা রুটে দৈনিক পাঁচ থেকে ছয়টি ট্রেন এবং সপ্তাহের অন্যান্য দিনে আরও কিছু ট্রেন ভারতীয় রেলের দ্বারা চালানোও হয়। উদাহরণস্বরূপ: ১২০২৩ (জনশতাবাদী এক্সপ্রেস) এসি চেয়ার কারের ভাড়া @ ৭৯০- (এক দিকের যাবার জন্য)।
এই ক্ষেত্রে তিনগুণ বেশি ভাড়া দিয়ে মানুষ কত দিন যাতায়াত করবে। খুব বেশি হলে শখ মেটাতে একবার বা দুইবারের বেশি নয়। সেক্ষেত্রে, এই প্রকল্পটি সম্পূর্ণ লোকসান কারণ এবং বর্তমানে ভারতীয় রেলওয়ে বাংলায় বন্দে ভারত এক্সপ্রেসের জন্য বিভিন্ন রুট চালু করা এখনও কার্যকর হয়নি। সবচেয়ে বড় উদাহরণ হল ডবল ডেকার এক্সপ্রেস চালানো হয়েছিল যা লোকসানের কারণে রেল দপ্তর থেকে প্রত্যাহার করা হচ্ছে।
পরে লোকসান ঘোষণা করে সেটি বন্ধ করে দেওয়ার মতো এমন ভুল সিদ্ধান্ত নিয়ে কী লাভ? পরে বলবেন, রেলওয়ে লোকসানে চলছে এবং এভাবে দিনের পর দিন রেলকে বেসরকারিকরণের দিকে ঠেলে দিচ্ছেন। চাকরি, নিরাপত্তা ও নিরাপত্তা তৈরি করা বা সঠিক সময়ে ট্রেন চালানোর মতো কোনো পরিষেবা উন্নত করতে সক্ষম নয়।
সাধারণ মানুষের দিকে না তাকিয়ে কেন্দ্রীয় সরকার রেল প্রকল্প বাস্তবায়নের দায়িত্ব সরাসরি বেসরকারি খাতের হাতে তুলে দেওয়ার উদ্যোগ নিচ্ছে। এটা ঠিক নয় এবং সাধারণ মানুষের কোন সূরাহা হচ্ছে না।
ইতিমধ্যে ৪০০০/- কোটি টাকা বন্দে ভারতের পিছনে খরচ করে ফেলেছে কেন্দ্রীয় সরকার। অথচ এটা কি আদৌও সফল প্রকল্প, এটাই এখন প্রশ্ন?
সবথেকে দুখের বিষয় : বর্তমানে এই অঞ্চলের যারা সাংসদ রয়েছেন তারা কখনো সংসদ ভবনে এই দুর্গাপুর -আসানসোল শিল্প অঞ্চলের জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে রেলের কোনো নতুন ইউনীট বা চিত্তরঞ্জন লোকোমোটিভ প্ল্যান্টের আরো আধুনিকতার ছোঁয়া লাগানো বা ডিএসপির মতো ইউনিটে আরো বেশি করে রেলের চাকার বরাদ্দ না বাড়িয়ে বরং উল্টে তুলে নিয়েছে। এতে অনেক কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হতো। আসানসোল, চিত্তরঞ্জন, এবং দুর্গাপুর থেকে হাওড়া পর্যন্ত প্রতিদিন আপ এবং ডাউন যাতায়াতকারী সাধারণ মানুষের জন্য লোকাল বা এক্সপ্রেস ট্রেনের জন্য বহুবার আবেদন করা হয়েছে, রেল মন্ত্রকে কিন্তু তা বাস্তবায়িত হয়নি, এটা হলে সাধারণ নিত্যযাত্রীদের এবং বহু রোগীদের অনেক উপকার হত বলে জানান নিত্যযাত্রী ও ব্যবসায়ী দেবাশীষ দাস এই বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর সহ রেল মন্ত্রককে তারা চিঠিও দিয়েছেন এখন এ বিষয় নিয়ে রেলমন্ত্রক আদৌ ভাববেন কিনা সেটাই দেখার বিষয়।