নতুন সিন্ডিকেটের হাত ধরে ফের শুরু হতে চলেছে কয়লার অবৈধ কারবার?
আমার কথা, দুর্গাপুর, ৪ সেপ্টেম্বর:
পুরোনো মদ নতুন বোতলে। ভোল পাল্টানো নতুন সিন্ডিকেটের হাত ধরেই আবার ফিরতে চলেছে বন্ধ থাকা কয়লার অবৈধ কারবার! জেলার বৃত্তে এখন এমনই জল্পনা ঘুরপাক খাচ্ছে, নতুন সিন্ডিকেট কারা থাকবে, কার হাতে থাকবে কত অংশীদারিত্ব,কে কোন এলাকা সামলাবে,সেইসব চুলচেরা হিসাব চূড়ান্ত হলেই শুরু হয়ে যাবে নতুন উদ্যমে কালো হীরের কারবার। এই মুহূর্তে এলাকায় কান পাতলেই শোনা যাচ্ছে এমনই নানান ফিসফাস। ২০১৪ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত খনি অঞ্চলে সিন্ডিকেটের মাধ্যমে অবাধে চলেছে কয়লার অবৈধ কারবার। অবৈধ কয়লা পাচার বাম আমলেও হতো, তবে উল্লিখিত পাঁচ বছরই পাচারকারীদের স্বর্ণযুগ হিসেবে পরিচিত। রাজু ঝা-র সূর্য অস্তাচলে যেতেই সাম্রাজ্যের অধিপতি হয়ে বসেন অনুপ মাঝি ওরফে লালা। বর্তমানে তাঁর বিরুদ্ধে চলছে সিবিআই, ইডি-র তদন্ত। ইতিমধ্যেই সিন্ডিকেটের লোকজন, ইসিএল এর আধিকারিক, সংস্থার নিরাপত্তা আধিকারিক সহ অনেকেই রয়েছেন জেল হেফাজতে। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী এজেন্সিগুলির সক্রিয়তার কারণে আগে সংগঠিতভাবে যে হারে পাচার হতো এখন তা অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
তবে সম্প্রতি এলাকায় কান পাতলে শোনা যাচ্ছে ফের শুরু হতে চলেছে কয়লার অবৈধ কারবার। এই কারবার শুরু হবে নতুন করে গড়ে ওঠা সিন্ডিকেটের মাধ্যমে। আসানসোল ও আশপাশের এলাকার সদস্যদের নিয়েই ছিল লালার সিন্ডিকেট। নতুনভাবে গড়ে ওঠা এই সিন্ডিকেটে থাকার জল্পনা রয়েছে ধানবাদ,বরাকর, আসানসোল, রানিগঞ্জ, দুর্গাপুর, ডানকুনি এমনকি কলকাতার পরিচিত কুখ্যাত কয়লা কারবারিদেরও। তবে এটাও জল্পনা, নতুনদের নিয়ে সিন্ডিকেট গড়ে উঠলেও পাচার কারবার চলবে মূলত লালার সিন্ডিকেটের পুরনো ফর্মূলা ও রূপরেখা অনুযায়ীই। বরাকর থেকে দুর্গাপুর দায়িত্ব সামলাবে একদল, অন্য দলের দায়িত্ব থাকবে দুর্গাপুর থেকে ডানকুনি পর্যন্ত পাচারের। পুরো কারবারের অংশীদারিত্ব নিয়ে চলছে আলোচনা। সূত্রের খবর,এই সিন্ডিকেটে যে যত বিনিয়োগ করবে, সেই অনুযায়ী অংশীদারিত্ব থাকবে সদস্যদের। লালার সিন্ডিকেটের সময় ইসিএল-এর বৈধ খাদানের পাশাপাশি কয়লা তোলা হতো অবৈধ খাদানগুলি থেকেও। সূত্রের খবর, নতুন সিন্ডিকেটেরও নজর রয়েছে বিস্তীর্ণ খনি অঞ্চলে বন্ধ থাকা পরিত্যক্ত খাদানগুলির দিকে। বন্ধ খাদানগুলি থেকে কয়লা তোলার কাজ তুলনামূলক সহজ। কারণ পরিত্যক্ত খাদান গুলিতে নজরদারি থাকে না। এখন প্রশ্ন হল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী এজেন্সি গুলির চোখ এড়িয়ে সিন্ডিকেটের কাজ কি আদৌ মসৃণ ভাবে চালাতে পারবে কয়লা সাম্রাজ্যের নয়া কুশীলবরা?