অমানবিক পরিবার! চিকিৎসার পরেও ফিরতে পারছেন না বাড়িতে
আমার কথা, দুর্গাপুর, ৬ অক্টোবরঃ
অমানবিকতার চরম নিদর্শণ দেখা গেল শহর দুর্গাপুরের বুকে। অনেকেই বলছেন মানুষটি নাকি অবস্থাপন্ন ঘরের। অথচ আজ তারই না মাথার উপর আছে ছাদ আর না পায়ের তলায় আছে মাটি। পরিজনদের দ্বারা ত্যাগ করা অশীতিপর মানুষটির ঠাঁই হয়েছে হাসপাতালের বিশ্রামাগারে।
মানুষটির নাম পরিচয় জানা নেই। মাস দুয়েক আগে দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করে দিয়ে গিয়েছিলেন বছর বাহান্ন কি তিপ্পান্ন হবে বেনাচিতির বাসিন্দা ওই ব্যাক্তিকে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান চার চাকা গাড়িতে করে তাঁকে এই হাসপাতালে এনে দিয়ে যান ব্যাক্তির পরিজনেরা। এরপর দিন দশেক তাঁকে নিয়ম করে দেখতেও আসতো তাঁর পরিবারের লোকজন। কিন্তু তারপরেই সব বন্ধ আর দেখা মেলেনি তাঁর পরিবারের একজন সদস্যেরও। কিন্তু হাসপাতালের নার্স ও চিকিৎসকদের দেখভালে ক্রমশ সুস্থ হয়ে ওঠেন ওই ব্যাক্তি। পুরোপুরি সুস্থ হওয়ার পর হাসপাতাল থেকে তাঁর ছুটিও হয়ে যায়। কিন্তু অসহায় ওই মানুষটি যাবেন কোথায়? তখন তিনি আশ্রয় নিলেন হাসপাতালেরই বিশ্রামাগারে। না ঠিক মতো খাবার জোটে আর না বাড়ি ফিরে যাওয়ার কোনো সম্ভাবনা। তবে দু একদিন পর আশেপাশের লোকজন যখন দেখলেন ওই অসহায় ব্যাক্তি বাড়ি ফিরতে পারছেন না, তখন তাঁরা এসে দাঁরালেন পাশে। দিতে শুরু করলেন খাবার। কিন্তু একটু একটু করে ফের অসুস্থ হয়ে পড়লেন অসহায় ওই মানুষটি। ক্রমশ হারিয়ে ফেললেন চলাফেরার ক্ষমতাও। হয়ত মানসিকভাবে বিপর্যস্ত মানুষটি বুঝতে পারলেন এক সময় যাদের কাছে তাঁর গুরুত্ব ছিল, আজ সেই গুরুত্ব তিনি হারিয়েছেন। তাই অপাঙতে হয়ে তাঁর ঠাঁই হয়েছে বাড়ির বাইরে।
হাসপাতাল সুপার ডাঃ ধীমান পাল বলেন, আমরা নানা ভাবে চেষ্টা করছি যদি ওই মানুষটির নাম পরিচয় আর ঠিকানা জোগাড় করা যায়। তাহলে তাঁর পরিবারের সাথে যোগাযোগ করে তাঁকে পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার। পাশাপাশি তিনি এও জানান, যদি ওই ব্যাক্তির প্রয়োজন হয় তাহলে ফের হাসপাতালে ভর্তি করে তাঁর চিকিৎসার ব্যবস্থাও করা হবে।
কিন্তু প্রশ্ন উঠছে যদি তর্কের খাতিরে ধরেই নেওয়া যায় যে, ব্যাক্তির নাম পরিচয় জানা গেল, পাওয়া গেল ঠিকানাও। তাহলেও কি তিনি ফিরতে পারবেন তাঁর সেই সাধের অমানবিক পরিবারের কাছে বা নিজের বাড়িতে?