এম.এর (দুরশিক্ষা) ফল এখনো না বেরোনোয় বিক্ষোভ বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ে
আমার কথা, পূর্ব বর্ধমান(বর্ধমান), ২৫ এপ্রিলঃ
২০১৯-২০২১ বছরে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের দূরশিক্ষা বিভাগের এমএ পার্ট টু ফাইনাল রেজাল্ট এখনও না বের হওয়ায় এবং কর্তৃপক্ষের তরফে কোনো সদুত্তর না মেলায় সোমবার ব্যাপক ক্ষোভে ফেটে পড়লেন শতাধিক ছাত্রছাত্রী। সোমবার সকালে ছাত্রছাত্রীরা তাঁদের রেজাল্টের দাবী নিয়ে প্রথম দূরশিক্ষা ভবনে যান। কিন্তু সেখান থেকে কোনো সদুত্তর না পাওয়ায় তাঁদের বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ামকের কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। এরপর ছাত্রছাত্রীরা বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের কন্ট্রোলার বিভাগে এসে দেখেন দুটি গেটেই তালা ঝোলানো রয়েছে। বারবার ছাত্রছাত্রীরা কন্ট্রোলার অনিন্দ্যজ্যোতি পালের সঙ্গে দেখা করার কথা বললেও তাঁদের দাবী না মানায় বিক্ষোভ শুরু করেন ছাত্রছাত্রীরা। শুরু হয় শ্লোগান। প্রায় ঘণ্টা খানেক ধরে হাতে প্লাকার্ড নিয়ে এই বিক্ষোভ চলার পর পুলিশী হস্তক্ষেপে ছাত্রছাত্রীদের ২জন প্রতিনিধি গিয়ে দেখা করেন পরীক্ষা নিয়ামকের সঙ্গে। পরীক্ষা নিয়ামক অনিন্দ্যজ্যোতি পাল জানিয়েছেন, তাঁরা দ্রুত চেষ্টা করছেন ফল প্রকাশের। এদিকে, এদিন বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ে এই ছাত্র বিক্ষোভ নিয়ে ব্যাপক শোরগোল শুরু হয়। অভিরুপ দত্ত, সপ্তিক ঘোষ, জাগৃতি ঘোষ প্রমুখ ছাত্রছাত্রীরা জানিয়েছেন, ২০১৯-২০২১ এই বছরের তাঁরা দূরশিক্ষা বিভাগের ছাত্রছাত্রী। ২০২১-এর ডিসেম্বর মাসে তাদের ফাইনাল পরীক্ষা হবার কথা থাকলেও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ নির্দিষ্ট সময়ে সেই পরীক্ষা নিতে পারেনি। এরপর ছাত্রছাত্রীদের আন্দোলন শুরু হলে চলতি ২০২২ বছরের জানুয়ারী মাসে তাদের পরীক্ষা নেওয়া হয়। এর ফলে স্বাভাবিকভাবেই ছাত্রছাত্রীদের একটা বছর নষ্ট হয়েছে। এরই মাঝে আবার বি.এডে ভর্তি নিয়ে সংকট সৃষ্টি হচ্ছে। তাঁদের কাছ থেকে মার্কসিট এবং মাইগ্রেশন সার্টিফিকেট চাওয়া হচ্ছে। কিন্তু তাঁরা তা দিতে পারছেন না। ফলে সেক্ষেত্রেও ছাত্রছাত্রীদের ভবিষ্যত চরম সংকটে পড়েছেন। অথচ কবে তাঁরা রেজাল্ট পাবেন সে বিষয়ে বারবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে জানতে চাইলেও তাদের তা জানানো হচ্ছে না। বাধ্য হয়েই তাই এদিন তাঁরা এসেছেন কবে ফল প্রকাশিত হবে তা সঠিকভাবে জানতে। কিন্তু এখানে আসার পর কন্ট্রোলার সেকশনের দুটি গেটেই উদ্দেশ্যমূলকভাবে তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হয়। বারবার তাঁরা কন্ট্রোলারের সঙ্গে দেখা করার চেষ্টা করলেও অফিস থেকে কখনও জানানো হয় – তিনি খাচ্ছেন আবার কখনও বলা হয় তিনি অফিসে নেই। আর এরপরেই ছাত্রছাত্রীদের ক্ষোভ বাড়ে। কেন ছাত্রছাত্রীদের জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলা হচ্ছে তা জানতে চান ছাত্রছাত্রীরা। দীর্ঘক্ষণ এভাবে বিক্ষোভ চলার পর অবশেষে বর্ধমান থানা থেকে পুলিশ গিয়ে মধ্যস্থতা করে। ২জন ছাত্র প্রতিনিধিকে নিয়ে দেখা করানো হয় কন্ট্রোলারের সঙ্গে। উল্লেখ্য, তীব্র গরমের মাঝেও এদিন আসানসোল , বরাকর সহ নানা জায়গা থেকে ছাত্রর ছাত্রীরা এসে জড়ো হন বিশ্ববিদ্যালয়ে। গরমের মধ্যে অসুস্থও হয়ে পড়েন অনেকে। ছাত্রছাত্রীরা অভিযোগ করেছেন, আগেই টাকা নিয়ে নেওয়া হয়েছে । অনলাইন এর মাধ্যমে সমস্ত টাকা নেওয়া হলেও রেজাল্ট প্রকাশ করেনি বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। ২০২১ এ শিক্ষাবর্ষ শেষ হয়ে গেলেও ২০২২ এর এপ্রিল মাসেও মেলেনি মার্কশিট। এদিন এই বিক্ষোভের জেরে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ামক অনিন্দ্যজ্যোতি পাল জানিয়েছেন, তিনি এদিন ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে কথা বলেছেন। তাঁদের জানিয়েছেন, যত দ্রুত সম্ভব ফলাফল প্রকাশ করার চেষ্টা করছেন তাঁরা। গেটে তালা লাগানোর প্রশ্নে তিনি জানিয়েছেন, এ্যাডমিনিষ্ট্রেটিভ কাজকর্মের জন্য দুটি গেটকেই টেনে রাখা হয়েছিল। ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে কোনো দুর্ব্যবহার করা হয়নি।