অস্ত্রপচারের জায়গা দিয়ে বেরিয়ে এলো যন্ত্র, প্রশ্নের মুখে দুর্গাপুরের বেসরকারী হাসপাতাল
আমার কথা, পশ্চিম বর্ধমান(দুর্গাপুর), ২২ ফেব্রুয়ারীঃ
দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানার অবসরপ্রাপ্ত কর্মী কাশীনাথ চৌধুরী। দুর্গাপুর ইস্পাত নগরীর এজোনের এস. এন. ব্যানার্জী রোডের বাসিন্দা। কাশীনাথ বাবু কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতাল থেকে হার্ট এর সমস্যার জন্য পেশমেকার যন্ত্র বসিয়েছিলেন। কিন্ত গত বছর শেষের দিক করে হঠাৎ ফের বুকে ব্যাথা শুরু হয় কাশীনাথ বাবুর। দেরি না করে দুর্গাপুরের বিধাননগরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে তাঁকে নিয়ে যায় কাশীনাথ বাবুর পরিবার। গত বছর ডিসেম্বরের ৯ তারিখ ঐ বেসরকারি হাসপাতালে অস্ত্রপচার হয় কাশীনাথ চৌধুরীর। হার্টের গতি নিয়ন্ত্রণ করার জন্য অত্যাধুনিক মানের সি. আর. টি. ডি নামে একটি যন্ত্র অবসরপ্রাপ্ত এই ইস্পাত কর্মীর বুকে লাগানো হয়।
অভিযোগ, বিপত্তির শুরুটা এইখান থেকে। ১৩ ই ডিসেম্বর হাসপাতাল থেকে ছাড়ার পর দিন পনেরো কাটতে না কাটতে ফের বুকে ব্যাথা শুরু হয় কাশীনাথবাবুর। একটা ছোট গর্তের মতো তৈরী হয় বুকের বাম দিকে অস্ত্রপচারের জায়গায়। এরপর থেকে প্রতিনিয়ত হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে জানানোর পরও কোনোরকম গুরুত্ব দেওয়া হয়নি বলে পরিবারের অভিযোগ।
দিন কয়েক পর এবার কাশীনাথবাবুর বুকের ভেতরের ঐ যন্ত্র বাইরে গর্ত দিয়ে বেড়িয়ে আসে, এরপর থেকেই শুরু হয় চৌধুরী পরিবারের আতঙ্ক।
প্রায় সাত লক্ষ টাকার মতো চিকিৎসা বাবদ খরচ নিয়ে নেওয়া হয় হাসপাতালের তরফে, কিন্তু যখনি রোগীর এই অবস্থার কথা জানানো হয় তখনই ইনফেকশন বলে ড্রেসিং করে ছেড়ে দেওয়া হতো বলে পরিবারের অভিযোগ। কিন্তু অবস্থার অবনতি হওয়ায় এবার গোটা পরিবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও স্বাস্থ্য মন্ত্রককে মেল করে সব লিখিত ভাবে জানায়। মেল পেয়ে তড়িঘড়ি জেলা স্বাস্থ্য দফতর দুর্গাপুরের বেসরকারি ঐ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি খতিয়ে দেখার নির্দেশ দেন। নড়েচড়ে বসে হাসপাতাল কৃর্তৃপক্ষ। সাথে সাথে বিড়ম্বনা এড়াতে এবার রোগী সহ পরিবারের লোকজনকে ডেকে পাঠানো হয় হাসপাতালে, বসে বোর্ড মিটিং। অত্যন্ত সংকটজনক অবস্থায় বুক ফুঁড়ে বেড়িয়ে আসা ঐ যন্ত্র বুকে চেপে নিয়ে কাশীনাথবাবুকে নিয়ে আসা হয় বেসরকারি হাসপাতালে। পরিবারের দাবী ছিল তাদের প্রিয়জনকে সুস্থ করে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে দিক হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। প্রথমটা আতঙ্কে অ্যাম্বুলেন্স থেকে হাসপাতালের স্ট্রেচারে যেতে চায়নি ঐ রোগী, পড়ে বুঝিয়ে সুঝিয়ে তাকে হাসপাতালের ভেতর নিয়ে যাওয়া হয়। একমাত্র ছেলে পুলিশ কর্মী, তিনিও এইদিন হাসপাতালে এসে ক্ষোভে ফেটে পড়েন।
হাসপাতাল সুপার ডক্টর দুর্গাদাস রায় জানান, অভিযোগ ভিত্তিহীন, তদন্ত করে বোর্ড মিটিং করে সবটা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।