নবীনপল্লীর ঘটনায় নতুন রঙ, গৃহবধূর আত্মহত্যার চেষ্টা সাজানো ঘটনা, অভিযোগ তৃণমূলের
আমার কথা, দুর্গাপুর, ২৩ জুনঃ
দুর্গাপুরে নবীনপল্লীর বাসিন্দা গৃহবধূর স্বামীর কাজ ফিরিয়ে দেওয়ার শর্তে রাত্রিবাস করতে হবে এক তৃণমূল নেতা সহ তিন তৃণমূল কর্মীর সাথে আর সেই কুপ্রস্তাবে রাজী না হওয়ায় তরুণীকে লাগাতার হুমকি, আর হুমকির ভয়ে সুইসাইড নোট লিখেআত্মহত্যার চেষ্টা করেন গৃহবধূ। ঘটনার লিখিত অভিযোগ থানায় দায়ের করার পর দুজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। কিন্তু বাকি দুজনকে কেন গ্রেফতার করা হল না এই অভিযোগে দুর্গাপুরের নিউটাউনশিপ থানায় বিক্ষোভ দেখান আসানসোলের বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পাল। এদিকে, ওই বিজেপি নেতৃকে কালো পতাকা দেখিয়ে গো-ব্যাক শ্লোগান দেন এলাকার তৃণমূল কর্মীরা।
প্রসঙ্গতঃ ভোটের আগে দুর্গাপুরের ২৩ নং ওয়ার্ডের নবীনপল্লীতে অবৈধ মদের দোকান বন্ধ করে এলাকার মহিলাদের একাংশ। তাদের মধ্যে ওই গৃহবধূও ছিলেন। অভিযোগ মদের দোকানগুলি চালায় তৃণমুলের ওয়ার্ড সহ সভাপতি সুকুমার বাউড়ি। এই ঘটনার পরেই ওই গৃহবধূর স্বামীকে ঠিকাদারি(একটি বেসরকারী স্পঞ্জ আয়রন কারখানায় ঠিকাদারের কাজ করতেন) থেকে সরিয়ে দেয় ২৩ নং ওয়ার্ডের তৃণমুল নেতৃত্ব বলে অভিযোগ। কিন্তু স্বামীর কাজ ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি জানান ও তরুণী। অভিযোগ, তারপরেই তৃণমূল নেতা সুকুমার বাউড়ি, বিল্লি, বাদল ভুঁড়ি, বিশ্ব বাউড়ি ওই গৃহবধূকে ক্ষমা চাইতে বলেন আর সাথে তাদের সাথে রাত্রিবাস করার প্রস্তাব দেন। সেই প্রস্তাবে রাজি হননি গৃহবধূ ওয়ার্ডের প্রাক্তন পুরপিতা দেবব্রত সাঁইয়ের। কিন্তু তাতেও কোনো কাজ না হওয়ায় শেষে আত্মহত্যার পথ বেছে নেন তরুণী। বর্তমানে তিনি একটি নার্সিংহোমে চিকিৎসারত। এদিকে গৃহবধূর পরিবারেরর পক্ষ থেকে নিউটাউনশিপ থানায় অভিযুক্ত ওই তৃণমূল নেতাদের নামে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়। পুলিস সুকুমার বাগদি ও বিল্লিকে গ্রেফতার করে।
বাকি দুজনকে কেন গ্রেফতার করা হল না, এই অভিযোগ তুলে থানায় যান বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পাল। তাঁর অভিযোগ, “যেমহিলা নির্যাতনের ভয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছে, যার পরিবারের সকলে ভয়ে ভয়ে রয়েছে, তাঁরা নিতাপত্তার অভাবে ভুগছেন। অভিযুক্তদের নামে থানায় অভিযোগও দায়ের করেছেন তাদের সকলকে কেন গ্রেফতার করা হল না?”
অন্যদিকে থানার থেকে কিছুটা দূরে ওই ওয়ার্ডের তৃণমূল কর্মীরা অগ্নিমিত্রা পালকে “গো-ব্যাক শ্লোগান দিতে থাকে। তাঁরা ওই তরুণীর বিরুদ্ধে পালটা অভিযোগ করে বলেন তরুণীর এর আগেও কয়েকবার আত্মহত্যার চেষ্টা করেছে। কেন বার বার সে আত্মহত্যার চেষ্টা করছে? তরুণীর বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক রয়েছে। যে নিজে মদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাচ্ছে তাঁর নিজের স্বামীই দিন রাত মদ্যপান করেন।
নবীনপল্লী এলাকার তৃণমূলের বুথ সভাপতি পরিমল হালদারের দাবি, “আত্মহত্যার নাম করে ওই মহিলা ভুয়ো ভিডিও বানিয়ে আমাদের কর্মীদের বদনাম করার চেষ্টা করছেন। আর অগ্নিমিত্রা পাল তাতে রাজনৈতিক রঙ দেওয়ার জন্য থানা ঘেরাও করছে। দুর্গাপু শান্ত জায়গা। তিনি এই জায়গাকে অশান্ত করতে এসেছেন আর তাই ওনাকে গো-ব্যাক বলা হয়েছে।