দুর্গাপুরে মৃত বৃদ্ধের করোনার রিপোর্ট পজিটিভ নাকি নেগেটিভ, দিনভর টানাপোড়েনের পর অবশেষে শ্মশানযাত্রা
আমার কথা, পশ্চিম বর্ধমান(দুর্গাপুর), ১ আগস্টঃ
দুর্গাপুরের ফরিদপুর গ্রামে শুক্রবার সকালে বৃদ্ধ পরেশনাথ দের মৃত্যুকে ঘিরে এবার ব্যাপক উত্তেজনা ছড়ালো ওই এলাকায়। এলাকাবাসীদের একাংশের দাবি করোনাতেই মৃত্যু হয়েছে বৃদ্ধের, কারন ইতিমধ্যেই করোনা হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা করিয়ে বাড়ি ফিরেছেন বৃদ্ধের বড় ছেলে ও তাঁর স্ত্রী। তবে বিষয়টি জানার পর ঘটনাস্থলে পৌঁছোয় পুলিশ, খবর দেওয়া হয় স্বাস্থ্যদপ্তরকেও। যদিও পরেশনাথবাবুর করোনা টেস্টের রিপোর্ট তখনও এসে পৌঁছোয়নি। কিন্তু মৃতদেহ বাড়িতে বেশী সময় ধরে ফেলে রাখা ঠিক নয়, তাই বিকেল ৫টা নাগাদ সৎকারের জন্য সরকারী নিয়মামাফিক মৃতদেহ নিয়ে যাওয়ার তোড়জোড় শুরু করতেই বৃদ্ধের পরিবার ও এলাকাবাসীরা মৃতদেহ তুলতে বাধা দেন। পুলিশের সাথে শুরু হয় বচসা। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছন ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট উদয়নারায়ন জানা ও দুর্গাপুর নগর নিগমের স্বাস্থ্য বিভাগের মেয়র পারিষদ রাখী তিওয়ারী। তাদের ঘিরেও ক্ষোভ প্রকাশ করে মৃতের পরিবার সহ স্থানীয়রা। স্থানীয়দের অভিযোগ কেন মৃতদেহ এত দেরীতে নিতে আসা হল? কারন স্থানীয়দের অনুমান অনুযায়ী পরেশনাথবাবু করোনায় আক্রান্ত হয়েই মারা গেছেন আর একজন করোনায় মৃত ব্যাক্তির দেহ এত সময় এলাকায় পড়ে থাকলে এলাকাটি করোনায় সংক্রমিত হতে পারে। অপরদিকে বৃদ্ধের পরিবারের তরফে দাবি করা হয় যে পরেশনাথবাবু হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে। তাই পরেশনাথবাবুকে সরকারী নিয়মে দাহ করার পর যদি রিপোর্ট নেগেটিভ আসে তাহলে পরিবারের সদস্যরা তাঁকে সৎকার করার থেকে বঞ্চিত হবে।
বিষয়টি শুনে রাখী তিওয়ারী স্থানীয়দের উদ্দেশ্যে জানান যে, মৃতদেহ এখনই দাহ করা হবে না, আপাতত মৃতদেহ দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে রাখা হবে। রিপোর্ট আসার পর যদি জানা যায় যে পরেশনাথবাবু করোনা পজিটিভ ছিলেন তাহলে সরকারী নিয়ম অনুসারে তাঁকে দাহ করা হবে আর যদি রিপোর্ট নেগেটিভ আসে তাহলে মৃতদেহ তাঁর পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হবে। এই প্রতিশ্রুতির পর পরিস্থিতি শান্ত হয়। এরপর মৃতদেহ নিয়ে যাওয়ার তোড়জোড় শুরু হয়। এর মধ্যেই এলাকা জীবানুমুক্ত করার কাজও শুরু হয়ে যায়। সাথে দমকল বিভাগ থেকেও পুরো এলাকা জীবানুমুক্ত করা হয়। এরই মধ্যে পরেশনাথবাবুর করোনার রিপোর্টও এসে পৌঁছোয় মেয়র পারিষদের হাতে। তাতে দেখা যায় পরেশনাথবাবুও করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন।