কড়া নিরাপত্তার মধ্যে নিজের বিধানসভা কেন্দ্রে ঘুরে গেলেন জিতেন্দ্র তিওয়ারী

আমার কথা, পশ্চিম বর্ধমান(পান্ডবেশ্বর), ৩১ডিসেম্বরঃ
ভুল বোঝাবুঝি হয়েছিল, দলের নেতাদের সাথে কথা বলে মিটে গেছে। আবার দলের হয়ে কাজ করব। পশ্চিম বর্ধমান জেলায় নটি আসনেই তৃণমূল জিতবে, দলের জেলা সভাপতি ও আসানসোল পুরসভার দায়িত্ব থেকে ইস্তফা দেওয়ার পর প্রথমবার নিজের বিধানসভা কেন্দ্র পাণ্ডবেশ্বরে এসে এ কথাই বললেন জিতেন্দ্র তিওয়ারি। বৃহস্পতিবার হরিপুরের রামসীতা মন্দিরে পূজো ও লাউদোহার পলাশবনি গ্রামে সোনাঝুরি মাজারে চাদর চাপাতে সস্ত্রীক আসেন জিতেন্দ্রবাবু। বেলা বারোটা নাগাদ তিনি হরিপুর রামসীতা মন্দিরে পৌঁছান। আগে থেকেই সেখানে উপস্থিত ছিল প্রায় শ দুয়েক তৃণমূল কর্মী সমর্থক ও জিতেন্দ্রর অনুগামীরা। সেখানে দেখা যায় পাণ্ডবেশ্বর পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষ মনির মন্ডল , প্রল্লাদ সাউ , পশ্চিম বর্ধমান জেলা পরিষদের কর্মদক্ষ্য শ্যামল বাগদি সহ অন্যদের। মন্দিরে সস্ত্রীক পুজো দিয়ে বেরিয়ে তিনি সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন, বলেন “তৃণমূলে ছিলাম, তৃণমূলেই আছি। রাগের মাথায় দলের বিরুদ্ধে যা বলেছিলাম তার জন্য দলের কাছে ক্ষমা চেয়ে নিয়েছি।” বিজেপিতে তার যাওয়ার সম্ভাবনা নিয়ে যে জল্পনা তৈরি হয়েছে সেই প্রসঙ্গে জিতেন্দ্রবাবু বলেন “কখনোই আমি বিজেপিতে যাব বলিনি। আমি বলেছিলাম রাজনীতি থেকে অবসর নিয়ে প্রয়োজনে কোর্টে ওকালতি করব।” সোশ্যাল মিডিয়ায় তার দলবদল নিয়ে জল্পনা প্রসঙ্গে বলেন “সোশ্যাল মিডিয়ায় আমার কোন হাত নেই, যতদিন রাজনীতি করবো তৃণমূলের হয়ে কাজ করব” বলে সেই জল্পনায় জল ঢালেন তিনি। পাণ্ডবেশ্বরে দলের ব্লক সভাপতির নেতৃত্বে তার বিরুদ্ধে মিছিল ও কুশপুতুল পোড়ানো সম্পর্কে জিতেন্দ্রবাবু বলেন “আমি দলের বিরুদ্ধে কিছু ক্ষোভের কথা জানিয়ে ছিলাম, তারই প্রতিক্রিয়ায় দলের কিছু নেতা কর্মী সমর্থক বিক্ষোভ দেখিয়েছিল, এটাই স্বাভাবিক।” তবে এই নিয়ে তার নিজের কোনো ক্ষোভ নেই বলে জানান তিনি। পাশাপাশি বলেন “যে দায়িত্ব দল দেবে সেই দায়িত্ব নিষ্ঠার সাথে পালন করব।” আগামী বিধানসভা ভোটে পাণ্ডবেশ্বর সহ জেলার ন’টি আসনেই তৃণমূল জিতবে বলে দাবি করেন জিতেন্দ্রবাবু। পাণ্ডবেশ্বরে তিনি ফিরলে কি প্রতিক্রিয়া হতে পারে এই নিয়ে চাপা উত্তেজনা ছিল গতকাল থেকেই। তাই তার নিরাপত্তায় আটোসাটো ছিল পুলিশি ব্যবস্থা। মন্দিরের চারপাশ বাঁশের ব্যারিকেড দিয়ে ঘিরে ফেলা হয়। কোন কর্মী সমর্থক বা অনুগামীকে ব্যারিকেডের ভেতর প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি। মন্দির থেকে বেরিয়ে জিতেন্দ্রবাবু অপেক্ষারত কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন। এরপর তিনি পান্ডবেশ্বরের পথ ধরে যান লাউদোহা ব্লকের পলাশবনি গ্রামে। সেখানকার সোনাঝুরি মাজারে তিনি চাদর উপহার দেন। বিধায়ককে স্বাগত জানাতে সেখানে আগে থেকেই উপস্থিত ছিলেন লাউদোহা ব্লকের দলের ব্লক সভাপতি সুজিত মুখোপাধ্যায়, যুব সভাপতি পলাশ পান্ডে সহ অন্যরা। নিরাপত্তার কারণে জিতেন্দ্রবাবুর আসা-যাওয়ার পথে মোতায়েন ছিল পুলিশি প্রহরা। বেশ কয়েকটি রাস্তায় যানবাহন নিয়ন্ত্রণ করতে দেখা যায় পুলিশকে। অরাজনৈতিক কর্মসূচিতে আজ তিনি পাণ্ডবেশ্বর ও লাউদোহা আসেন। কবে থেকে দলের রাজনৈতিক কর্মসূচি শুরু করবেন জিজ্ঞেস করায় জিতেন্দ্রবাবু বলেন “যেদিন জেলা সভাপতির পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছিলাম সেই দিনটি বাদ দিলে আমি দলের কাজেই রয়েছি।” তিনি বলেন “আজ মন্দিরে মসজিদে পুজো দিয়ে দলের নেতাকর্মীদের সাথে দেখা করলাম, কথা হল, এগুলোতো সবই দলেরই কাজ।” অন্যদিকে পাণ্ডবেশ্বরে জিতেন্দ্রর বাবুর আজকের কর্মসূচির ব্যাপারে দলের ব্লক সভাপতি নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তীর কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। বিধায়কের আজকের কর্মসূচির পর এলাকায় কি প্রতিক্রিয়া হয় এখন সেটাই দেখার।