নার্সিং পড়ুয়ার ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার, মৃত্যু নিয়ে ধন্দ্বে পরিবার

আমার কথা, কাঁকসা, ২৮ ফেব্রুয়ারীঃ
বেসরকারি মেডিকেল কলেজের হোস্টেল থেকে উদ্ধার হল নার্সিং পড়ুয়ার মৃতদেহ। গলায় ওড়না জড়ানো ঝুলন্ত অবস্থায় তার মৃতদেহ উদ্ধার হয়। মৃত্যুর কারণ নিয়ে ধন্দ্ব মৃত ছাত্রীর পরিবারের । কাঁকসা থানার মলানদিঘির একটি বেসরকারি মেডিকেল কলেজের ঘটনা।
শুক্রবার দুপুরে কাঁকসা থানার মলানদিঘির একটি বেসরকারি মেডিকেল কলেজের হোস্টেলের রুম থেকে উদ্ধার হয় সুপ্রিয়া কোটাল (২৩) নামে এক নার্সিং পড়ুয়ার মৃতদেহ। ঝুলন্ত অবস্থায় দেহটি উদ্ধার হয় বলে হোস্টেল সূত্রে খবর।
হোস্টেলের অতিরিক্ত সুপার রাজর্ষি গুপ্তা বলেন এদিন সাড়ে ১২ টা নাগাদ ওই হোস্টেলের কয়েকজন ছাত্রী জানায় সুপ্রিয়ার রুমের দরজা বন্ধ রয়েছে। ডাকাডাকি করেও কোন উত্তর না পাওয়ায় রুমের দরজা ভাঙ্গা হয়। সুপ্রিয়াকে দেখা যায় ঘরের মেঝেতে অচৈতন্য অবস্থায় পড়ে আছে। মেডিকেল কলেজে নিয়ে গেলে সেখানকার চিকিৎসকরা সুপ্রিয়াকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
মৃত ছাত্রীর বাড়ি পাণ্ডবেশ্বরের উপর পাড়াতে। বাবা মোহিত কোটাল ইলেকট্রিক মিস্ত্রির কাজ করেন। তিনি তৃণমূলের এসটি সেলের অঞ্চল সভাপতি বলে স্থানীয় সূত্রে জানা যায়। সুপ্রিয়ার মা মহুয়া কোটাল বলেন বেলা একটা নাগাদ হোস্টেল থেকে ফোন করে জানানো হয় মেয়ে আইসিইউতে ভর্তি আছে। কি কারনে ভর্তি আছে তা অবশ্য জানানো হয়নি। হাসপাতালে এসে দেখি মেয়ের মৃতদেহ। মেয়ে হোস্টেলের রুমে গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করেছে বলে জানানো হয় আমাদের। তিনি বলেন মেয়ে আত্মহত্যা করেছে এ কথা বিশ্বাস হচ্ছে না। কারণ গলায় ফাঁস দিলে সেখানে দাগ থাকতো, কিন্তু মেয়ের গলাতে কোন দাগ আমরা দেখতে পাইনি। তিনি বলেন নার্সিং পড়ার জন্য দু’বছর ধরে মেয়ে হোস্টেলে রয়েছে। ১০ দিন আগে হোস্টেল থেকে মেয়ে বাড়ি এসেছিল। শিবরাত্রি পুজোর কয়েকদিন আগে হোস্টেলে ফিরে যায়। প্রতিদিনই ফোনে মেয়ের সাথে কথা হতো। গতকাল রাতেও কথা হয়েছে। মেয়ে বলেছিল শুক্রবার ডিউটি নিচ্ছি, রবিবার ছুটি আছে ঐদিন হোস্টেলে এসো দেখা করতে। সাথে মিষ্টি আর ছোলা নিয়ে আসতে বলেছিল। আজকে সকাল ন’টায় ফোন করেছিলাম তখন ফোন সুইচড অফ ছিল। ভেবেছিলাম ডিউটির কারণে হয়তো ফোন বন্ধ রেখেছে। ১২ টা নাগাদ আরও একবার ফোন করি তখনও ফোন সুইচড অফ ছিল। দুপুর ১ টা নাগাদ হোস্টেল থেকে ফোন করে জানানো হয় মেয়ে হাসপাতলে ভর্তি রয়েছে, এসে দেখি মেয়ের মৃতদেহ। “সুপ্রিয়ার আত্মীয় পাপাই রক্ষিত বলেন,”সুপ্রিয়া গলায় দড়ি দিয়েছে শুনে মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পৌঁছাই। এসে দেখি সে মারা গেছে। সুপ্রিয়া শুধু বলতো আমাদের এতগুলো মেয়ের মধ্যে ৫০ জন পাস করেছে দু’জন ফেল করেছি। তবে কি কারণে মৃত্যু হয়েছে আমরা বুঝে উঠতে পারছি না।”
পুলিশ দেহটি উদ্ধার করে নিয়ে যাই। ময়না তদন্তের রিপোর্টে মৃত্যুর কারণ স্পষ্ট হবে বলে জানান থানার এক আধিকারিক। সুপ্রিয়ার মৃত্যুর খবরে পাণ্ডবেশ্বরের উপর পাড়াতে নেমেছে শোকের ছায়া।