“জেলা সভাপতি হিসেবে এটাই বোধহয় আমার শেষ ভাষণ, বিকেলেই হয়ত দল ছাড়ার নির্দেশ আসতে পারে”-জিতেন্দ্র তিওয়ারী
আমার কথা, পশ্চিম বর্ধমান(দুর্গাপুর), ১৬ডিসেম্বরঃ
“জেলা সভাপতি হিসেবে এটাই বোধহয় আমার শেষ ভাষণ”- বুধবার দুর্গাপুরে একটি বেসরকারী কারখানায় আইএনটিটিইউসির সভাতে যোগ দিয়ে সেখানে এই মন্তব্যই করেন তৃণমূল কংগ্রেসের পশ্চিম বর্ধমানের জেলা সভাপতি জিতেন্দ্র তিওয়ারী। তিনি জানান তাঁকে চলতি মাসের ১৮ তারিখ পর্যন্ত্য দলের কোনো সমাবেশ কিংবা মিটিং মিছিলে যোগ না দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে কলকাতা থেকে। জিতেন্দ্রবাবু বলেন যে, এর আগে দলের একটি সভায় তিনি যোগ দেননি ঠিকই, কিন্তু বুধবারের এই সভার জন্য আগে থেকেই আইএনটিটিইউসির জেলা সভাপতি বিশ্বনাথ পাড়িয়ালকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন এই সভায় তাঁর পাশে থাকবেন তাই তিনি কলকাতা থেকে আসা নির্দেশকে উপেক্ষা করেও এসেছেন আর তার জন্য যদি বিকেলে তাঁকে জেলা সভাপতির পদ ছাড়ার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয় তাহলে তাঁর দুমিনিটও সময় লাগবে না পদ ছাড়তে।
তিনি আরো বলেন, “আমি বিধায়ক হয়েছি দলের সমর্থন নিশ্চয়ই ছিল, কিন্তু আমার ব্যাক্তিগত ইমেজও এতটা খারাপও ছিল না যে আমদের ব্যাক্তিগত সমর্থন কোনো মানুষ দিতো না। মানুষের অধিকারের কথা বললেই বলা হতো আমাকে দল থেকে চলে যেতে হবে। ভয়ে ভয়ে কতদিন থাকা যায়? একদিন তো সিদ্ধান্ত নিতেই হতো। এখন সিদ্ধান্ত নিয়েছি আর ভয় পাবো না। বললে চলে যাবো কিন্তু মানুষের সাথে থাকব।”
এদিন তৃণমূলের সভামঞ্চ থেকে রাজ্যের সদ্য প্রাক্তন মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীকে কার্যত সমর্থন করে পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের বিরুদ্ধে গর্জে ওঠেন আসানসোলের মেয়র তথা জেলা সভাপতি জিতেন্দ্র তিওয়ারী। তিনি বলেন শুভেন্দু অধিকারী ছ’মাস গুলির সামনে লড়াই করেছেন। তারপর তিনি নেতা হয়েছে। তাই তাঁর সমালোচনা মমতা বন্দোপাধ্যায়ের মুখে মানালেও ফিরহাদ হাকিমের মুখে মানায় না। এটা সত্যি যে দলে মমতা বন্দোপাধ্যায়ের পর জনপ্রিয় কোনো নেতা যদি থাকে তিনি হলেন শুভেন্দু অধিকারী। এটা অস্বীকার করার কোনো উপায় নেই। এটা উচিত ছিল দলে যে নেতারা আছে তাদের এই ভুল বোঝাবুঝি মিটিয়ে নেওয়া। শুভেন্দু অধিকারীকে জিজ্ঞেস করা উচিত ছিল কি সমস্যা হচ্ছে। এরা আমাদের মতো ছোট নেতাদের সমস্যাই মেটায় না তো শুভেন্দু অধিকারীর মতো এত বড় নেতার সমস্যা কি মেটাবে। আসলে এরা অন্য কারুর জন্য জায়গা ছাড়বে না, পুরোটাই এদের চাই। সরকার আর দলতাই যদি চলে যায় তাহলে তোমরা কি নিয়ে থাকবে? বিশ্বনাথ পাড়িয়ালকে আইএনটিটিইউসির দায়িত্ব দেওয়ার পর ভাবলাম যাক এবার এখানে শ্রমিকদের জন্য কাজ হবে। কিন্তু পরে বুঝলাম এই পদ লোক দেখানোর জন্য। কোনো কাজ করতে দেওয়া হচ্ছে না তাঁকে। তেমনই দলের জেলা সভাপতি আমি অথচ দলের একজন নেতার ইচ্ছে হয়নি তাই আমি কোনো মিটিং মিছিল করতে পারব না। কিন্তু আমি তৈরী আছি। বলার সাথে সাথে আমি এক মিনিটের মধ্যে পদ ছাড়তে রাজি আছি।”
স্বভাবতই দুর্গাপুরে এদিন জিতেন্দ্র তিওয়ারীর এহেন বক্তব্যের পর রাজনৈতিক মহল উঠছে প্রশ্ন বিস্ফোরক জিতেন্দ্র তিওয়ারীও কি তাহলে ঘাস ফুল শিবির ছেড়ে এবার পদ্মফুল শিবিরের দিকে পা বাড়াচ্ছেন? সেটা অবশ্য সময়ই বলবে।