যবনিকা পতন, সন্ধান মিলল দুর্গাপুর থেকে রহস্যজনকভাবে নিরুদ্দেশ হয়ে যাওয়া বেসরকারী কারখানার জি এমের
আমার কথা, পশ্চিম বর্ধমান, ৯জুলাইঃ
প্রায় ৭২ ঘণ্টার উৎকন্ঠার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে জৈন পরিবারে ফিরল স্বস্তি। সন্ধান মিলল রহস্যজনকভাবে নিরুদ্দেশ হয়ে যাওয়া দুর্গাপুরের ৫৪ ফুটের বাসিন্দা তথা একটি বেসরকারী কারখানার জেনারেল ম্যানেজার রাজেশ জৈনের। বিহারের ঔরঙ্গাবাদ থেকে আজ ওই ব্যাক্তিকে উদ্ধার করে পুলিশ। গোপন সুত্রে খবর পেয়ে দুর্গাপুর থেকে একটি তদন্তকারী পুলিশের দল ঔরঙ্গাবাদে পৌঁছোয়। সেখানে একটি জায়গায় রাজেশবাবুকে বাসে ওঠার সময় তাঁকে নিজেদের হেফাজতে নেয় ওই তদন্তকারী দলটি। ওই জায়গায় রাজেশবাবু কিভাবে পৌঁছলেন, এই ঘটনাটি কি আদৌ অপহরন নাকি এর পেছনে লুকিয়ে রয়েছে অন্য কোনো রহস্য তা জানতে রাজেশবাবুকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ।
প্রসঙ্গতঃ গত ৬ই জুলাই সিটি সেন্টার থেকে রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ হয়ে যান রাজেশ জৈন। দুর্গাপুরের ফরিদপুর ফাঁড়ির অন্তর্গত ৫৪ফুট এলাকায় ‘ন্যাচারাল হাইটস’ নামে বহুতল আবাসনে পরিবার নিয়ে বসবাস করেন রাজেশ জৈন। এছাড়াও রাজেশবাবু বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুরে একটি বেসরকারী ফেরো অ্যালয় কারখানার জেনারেল ম্যানেজার। পুলিশ সুত্রে জানা গেছে, গতকাল অর্থাৎ রবিবার দুপুর ১২টার পর তিনি বাড়ি থেকে জাংশল মলে একটি স্যালোঁতে চুল কাটাতে যাচ্ছেন বলে বাড়ি থেকে বের হন। এরপর বেশ কিছুটা সময় পেরিয়ে গেলেও তিনি ঘরে না ফেরায় তাঁর স্ত্রী তাঁকে মোবাইলে বার বার ফোন করলেও তিনি ফোন তোলেন না। এরপর সন্ধ্যের দিকে রাজেশবাবুর মোবাইল নাম্বার থেকে তাঁর স্ত্রীর কাছে একটি ফোন আসে। ফোনের অপর প্রান্ত থেকে বাংলা ভাষায় কিছু কথা রাজেশবাবুর স্ত্রীকে বলা হয়। কিন্তু রাজেশবাবুর স্ত্রী বাংলা ভাষা বুঝতে পারেন না বলে ওই ব্যাক্তি রাজেশবাবুর জন্য কোনো মুক্তিপন চেয়েছে কিনা তা নিশ্চিত হয়ে বলতে পারছেন না তিনি। তবে ফোনের অপর প্রান্তের ওই ব্যাক্তি একবার অপহরন কথাটা উচ্চারন করেছিলেন সেটি তিনি বুঝতে পারেন। এরপর দিশেহারা রাজেশবাবুর স্ত্রী তাঁর আত্মীয়দের বিষয়টি জানালে তারাই পুলিশে খবর দেয়।
বিষয়টি জানার পর দুর্গাপুর থানার পুলিশ তদন্তে নেমে জাংশন মল সহ আশেপাশের সমস্ত সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখে। পুলিশ সুত্র আরো জানা গেছে যে, সিসিটিভিতে রাজেশবাবুর জাংশন মলে ঢোকার ছবি দেখা যায়। এরপর মল থেকে বেরিয়ে একটি অটোতে চেপে যেতেও দেখা যায় রাজেশবাবুকে। সেই সুত্র ধরে ওই অটোচালককে থানায় ডেকে পাঠায় পুলিশ। তাঁর থেকেই জানতে পারে পুলিশ যে, অটোতে চেপে সিটি সেন্টার বাস স্ট্যান্ড যান রাজেশবাবু আর সেখানে গিয়ে তিনি অটোর ভাড়া মিটিয়ে দিয়ে অটোটি ছেড়ে দেন। এরপর থেকে তাঁর আর কোনো হদিশ পাওয়া যাচ্ছিল না।